অনলাইনডেস্ক:-www.tokdernews.comআমরা সবসময় দেশের জনগণের সত্য নিষ্ঠার সঙ্গে ও পাশে আছি।
নতুন টাকা ছাপানো নিয়ে দেশের ব্যাংক খাতে বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনা চলছে।বিশেষ করে টাকা ছাপিয়ে তারল্যসংকটে পড়া ছয় ব্যাংককে ২২হাজার ৫০০কোটি টাকা দেওয়া হবে, এমন খবরে এ আলোচনার পালে হাওয়া লেগেছে।অনেকের কাছে মনে হতে পারে, টাকা ছাপানো মানেই টাঁকশালের যন্ত্রে টাকা ছাপানো শুরু হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে তা ব্যাংকগুলোকে বস্তায় ভরে দেওয়া হবে।আসলে তা নয়।বাস্তবতা হলো,সব টাকা ছাপানো হয় না।কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ভল্টে সব সময়ই উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ছাপানো টাকা থাকে,তা চাহিদা অনুযায়ী বাজারে ছাড়া হয়।
আবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ছাপানো টাকাকে বলা হয় রিজার্ভ মানি, যা হার্ড মানি হিসেবেও পরিচিত।দেশের ব্যাংক খাতে গত সেপ্টেম্বরে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৭লাখ ৪১হাজার ৫৯৫কোটি টাকা।তখন দেশে ছাপানো টাকার পরিমাণ ছিল ৩লাখ ৭৫হাজার ২৭৩কোটি টাকা। আসলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ১০০টাকা ছাড়লে তা পাঁচ গুণের মতো, অর্থাৎ ৫০০টাকার ভ্যালু তৈরি করে।তবে টাকা ছাপানো হলে তা মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিতে পারে।সে জন্য অর্থনীতিবিদেরা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখার স্বার্থে টাকা না ছাপানোর পক্ষে মত দিয়ে থাকেন।
একটা উদাহরণ দিয়ে বিষয়টি পরিষ্কার করা যাক।ধরুন,ফারজানা হোসেন নামের একজন প্রতি মাসে এক লাখ টাকা বেতন পান।তা থেকে তিনি বাসাভাড়া,বাচ্চার স্কুলের বেতনসহ যাবতীয় খরচ ডিজিটাল মাধ্যমে পরিশোধ করেন।বাজারেরও বড় অংশ পরিশোধ করেন কার্ডের মাধ্যমে।শুধু যাতায়াত খরচ ও হাতখরচের জন্য মাসে হাজার দশেক টাকা নগদে তোলেন।অর্থাৎ তিনি ১০শতাংশ টাকা নগদে খরচ করেন। ঠিক এভাবেই দেশের বেশির ভাগ টাকা ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন হয়, যা ছাপানোর প্রয়োজন পড়ে না।এতে যেমন টাকা ছাপানোর খরচ কমে, অন্যদিকে আর্থিক লেনদেনের সঠিক হিসাবও সংরক্ষিত থাকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে,টাকা ছাপানো হলেই তা বাজারে বা ব্যাংকগুলোর কাছে দেওয়া হয় না।যে টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে বাজারে ছাড়া হয়,তার বড় অংশই ব্যাংক থেকে বের হয়ে মানুষের পকেটে ও বাড়িতে যায়।এসব টাকা হাতে হাতে ঘোরে,অর্থাৎ লেনদেন হয় এবং দ্রুতই ব্যাংকে ফিরে আসে না।ব্যাংকগুলোর ভল্টেও কিছু টাকা জমা থাকে,যা দিয়ে গ্রাহকের দৈনন্দিন নগদ টাকার চাহিদা মেটানো হয়।এ ছাড়া ছাপানো টাকার একটা বড় অংশ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে,গত ৫আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের মাসে ব্যাংকের বাইরে টাকার পরিমাণ কিছুটা বেড়ে যায়।পরের মাস সেপ্টেম্বরেই প্রায় ৯হাজার কোটি টাকা ব্যাংকে ফিরে আসে।এরপরের মাসগুলোয় অবশ্য ব্যাংকের বাইরে টাকার পরিমাণ বেড়ে যায় বলে জানান ব্যাংকাররা।কারণ, তারল্যসংকটে পড়া কয়েকটি ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের টাকা তোলার হিড়িক পড়ে।এসব টাকা ঘুরেফিরে আবার অন্যান্য ব্যাংকে জমা হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী,গত সেপ্টেম্বরে ব্যাংক খাতে ছাপানো টাকার পরিমাণ(রিজার্ভ মানি)ছিল ৩লাখ ৭৫হাজার ২৭৩কোটি টাকা, যা আগস্টে ছিল ৩লাখ ৮৫হাজার ৭৯৬কোটি টাকা।অর্থাৎ এক মাসে ছাপানো টাকার পরিমাণ কমে ১০হাজার ৫২৩কোটি টাকা।একই মাসে বাজারে প্রচলিত টাকার পরিমাণও কমে আসে।সেপ্টেম্বরে বাজারে চালু থাকা টাকার পরিমাণ ছিল ৩লাখ ১১হাজার ১৩কোটি টাকা,যা আগস্টে ছিল ৩লাখ ১৮হাজার ৭১২কোটি টাকা।আগস্টে ব্যাংকের বাইরে মানুষের কাছে নগদে (হাতে ও বাড়িতে)ছিল ২ লাখ ৯২ হাজার ৪৩৪ কোটি টাকা,যা সেপ্টেম্বরে কমে হয় ২লাখ ৮৩হাজার ৫৫৩কোটি টাকা।
মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার পর যা আর ব্যাংকে জমা হয় না,তা-ই ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকা হিসেবে পরিচিত।এই টাকা মানুষ হয় দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে,নয়তো বেশি লাভের আশায় ব্যাংকের বাইরে বিভিন্ন সমিতিতে রাখেন বা জমি-ফ্ল্যাটে বিনিয়োগ করেন।আবার কেউ কেউ টাকা তুলে ঘরেও রেখে দেন।
ছাপানো টাকার মধ্যে গত আগস্টে ব্যাংকের ভল্টে ছিল ২৬হাজার ২৭৮ কোটি টাকা,যা সেপ্টেম্বরে বেড়ে হয় ২৭হাজার ৪৬০কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে গত আগস্টে ৬৭হাজার ৮৩কোটি টাকা ছিল,যা সেপ্টেম্বরে কমে হয় ৬৪হাজার ২৫৯কোটি টাকা।ফলে নতুন করে ছয় ব্যাংককে ২২হাজার ৫০০কোটি টাকা দেওয়া হলেও তার জন্য নতুন নোট ছাপানোর প্রয়োজন পড়ছে না।কারণ,এই টাকার বড় অংশই ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন হবে।বাকি যে টাকা প্রয়োজন হবে,তা ভল্ট থেকে দিতে পারবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সূত্র:-অনলাইন তোকদার নিউজ।
Copyright © 2015-2025 www.tokdernews.com
সাহসিকতা•সততা•সাংবাদিকতা:-
★প্রকাশক:- মোঃ মোশারফ হোসেন তোকদার।
★ব্যবস্থাপনা পরিচালক:- মোঃ এম,খোরশেদ আলম,সভাপতি প্রেসক্লাব পীরগাছা,রংপুর বিভাগ।
© All rights Reserved © 2020 গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত এই ওয়েবসাইটি Tokdernews.com বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পোর্টাল।