অনলাইনডেস্ক:-www.tokdernews.com আমরাসবসময় দেশের জনগণের সত্য নিষ্ঠার সঙ্গে ও পাশে আছি।
সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৯৬সালে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়।২০১১সালের ৩০জুন সংসদে গৃহীত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়।যদিও এর আগে নানা নাটকীয় ঘটনা ঘটে।
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল সংবিধানের যে ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে,সেই সংশোধনী বাতিল চেয়ে রিভিউ(পুনর্বিবেচনা)আবেদন করা হয়েছে।
গত ২৭আগস্ট সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি মো: আশফাকুল ইসলামের চেম্বার আদালতের অনুমতি নিয়ে এই আবেদন করা হয়।সুশাসনের জন্য নাগরিকের(সুজন)সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচ জন এই রিভিউ আবেদন করেছেন।(দ্য ডেইলি স্টার বাংলা,২৭আগস্ট ২০২৪)।
প্রসঙ্গত,সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ১৯৯৬ সালে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়।প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হকের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চ ২০১১সালের ১০মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন।এর মাস দেড়েক পরেই ৩০জুন সংসদে গৃহীত সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর সময় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়। যদিও এর আগে নানা নাটকীয় ঘটনা ঘটে।সেই ঘটনা প্রবাহ সংক্ষেপে তুলে ধরা হচ্ছে।
২০১০ সালেই বিএনপি বলেছিল তত্ত্বাবধায়ক থাকবে না:-
২০১০সালের ২১জুলাই সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর জন্য বিশেষ কমিটি গঠনের পরদিনই তৎকালীন বিরোধী দল বিএনপি নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিশেষ কমিটি গঠনের সমালোচনা করে।আওয়ামী লীগ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে বিদ্যমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন দলটির শীর্ষ নেতারা।
তারা বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে আবার ফখরুদ্দীন-মইন উদ্দিনের মতো কারচুপির নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার ষড়যন্ত্র করছে।সরকার আবার বাকশাল কায়েম করার পথে অগ্রসর হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতারা।
যদিও আওয়ামী লীগ বা সংবিধান সংশোধনে গঠিত বিশেষ কমিটি যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে দেবে,তা ওই সময়ে পরিষ্কার ছিল না।কোনো ইঙ্গিতও ছিল না।ফলে বিএনপি নেতাদের ওই মন্তব্য অনেকের কাছেই'টু আর্লি'বলে বিবেচিত হয়েছিল।
২০১১ সালের মার্চে দৃশ্যপট পরিবর্তন:-
বিশেষ কমিটি গঠনের পরে ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে কোনো আলোচনা হয়নি বা কমিটির ভেতরে আলোচনা হলেও বিষয়টি সাংবাদিকরা জানতে পারেননি।অন্তত ওই সময়ে কমিটির বৈঠকগুলো আমি নিয়মিত ফলো করলেও এই ইস্যুতে ভেতরে ভেতরে কী আলোচনা হচ্ছে সেটা ২০১১সালের মার্চ পর্যন্ত বুঝতে পারিনি।
২৪মার্চ বিশেষ কমিটির বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয় এবং বৈঠক শেষে কমিটির কো-চেয়ারম্যান সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে'মিডনাইট ল'বলে অভিহিত করে বলেন,একটা বিতর্কিত সংসদে কোনো দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই বিএনপি একা একা মধ্যরাতে এই বিল পাশ করেছে।এ নিয়ে কারো কোনো কথা বলার সুযোগ ছিল না।এখন আমাদের কাছে বিষয়টা এসেছে।এটা খুবই জটিল।আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার বিশ্লেষণ করছি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হচ্ছে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে সুরঞ্জিত বলেন,আমরা কোনো কিছুই বাতিল করছি না।তাছাড়া এই ইস্যু নিয়ে আদালতে এখনও শুনানি চলছে।আমরা এ নিয়ে আরও আলোচনা করব।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল ইস্যুতে বিরোধী দলের বক্তব্যকে তিনি'দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য'বলেও অভিহিত করেন।তিনি তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে রসিকতা করে বলেন,স্থানীয় সরকার,তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর মাঝখানে জমিরউদ্দিন সরকার-এই নিয়া আছি,বুঝছ?
সাবেক বিচারপতি ও আইনজ্ঞরা কী বলেছিলেন?
২০১১সালের ২৪এপ্রিল বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে বিশেষ কমিটি। এদিন সকাল-বিকাল দুই বেলা বৈঠক হয়।সকালে সাবেক প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতিদের সঙ্গে এবং বিকালে সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও আইনজ্ঞদের সঙ্গে।
বৈঠকে তাদের প্রায় সকলেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে কোনো বিচারপতিকে নিয়োগ না দেওয়ার বিধান রেখে সংবিধান সংশোধনের পরামর্শ দেন।তারা বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে বিচারপতিদের নিয়োগ দেওয়াটা স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।এর মাধ্যমে বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করা হয়েছে।বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখতে এ বিতর্কের অবসান হওয়া প্রয়োজন।
সাবেক প্রধান বিচারপতি মোস্তফা কামাল বৈঠক শেষে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন,বিচারপতিদের সামনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধানের মুলা ঝুলিয়ে রেখে তাদের সরকারের অনুগত করার চেষ্টা স্বাধীন বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।এ থেকে বিচারপতিদের রেহাই দেওয়া উচিত।
বিচারপতিদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সঙ্গে না জড়ানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন সিনিয়র আইনজীবী ড.এম জহিরও।তার মতে,সরকারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে প্রধান দুই দলের সমসংখ্যক সদস্য নিয়ে একটি প্যানেল গঠন করে তাদের হাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।সেক্ষেত্রে এটি আর নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না। এ ব্যবস্থায় কেউ প্রধান উপদেষ্টা থাকবেন না।রাষ্ট্রপতির অধীনে সরকারি ও বিরোধী দলের ১০জনই হবেন উপদেষ্টা।
সংবিধান বিশেষজ্ঞ ড.কামাল হোসেন বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো লোক পাওয়া যায়নি বলেই বিচারপতিদের এই দায়িত্ব দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।তিনি মনে করেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন,তারচেয়ে বড় কথা তিনি কতটা গ্রহণযোগ্য।
সদ্য বিদায়ী প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান না করার পক্ষে মত দিয়ে সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক উল হক বলেন, এতে বিচার বিভাগ বিতর্কিত হয়।বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়।
তবে সিনিয়র আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ভিন্নমত পোষণ করে বলেন,এ সরকার ব্যবস্থা গণতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।এক মুহূর্তের জন্যও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখা উচিত নয়।তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তে নির্বাচন কমিশনকে আরও শক্তিশালী ও স্বাধীন করার পরামর্শ দেন।
মহাজোটের সঙ্গে বৈঠক:-
২৫এপ্রিল বিশেষ কমিটির বৈঠক হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে।জাতীয় পার্টি,বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি,জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল(জাসদ),ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি ও গণতন্ত্রী পার্টির নেতারা বৈঠকে অংশ নেন।
প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিধান বাতিল করে এই ব্যবস্থার সংস্কার এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ৯০দিনের মধ্যে নির্বাচন ও সরকার গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিধান প্রণয়ন করার প্রস্তাব দেয় জাতীয় পার্টি।
দলের চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেন,এ ব্যবস্থাটি রাজনীতিবিদদের জন্য একটি কলঙ্ক তিলক।অর্থাৎ রাজনীতিবিদরা সৎ হতে পারেন না,নির্বাচনে তারা কারচুপি করতে পারেন-তাই তাদের বিশ্বাস করা যাবে না।এ কারণে একটি অনির্বাচিত সরকারের অধীনে থেকে রাজনীতিবিদদের নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে।এ অপমানজনক ব্যবস্থাটিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতিও দেওয়া হয়েছে।কিন্তু আমার একান্ত অপছন্দ থাকা সত্ত্বেও বিরাজমান নির্বাচন ব্যবস্থায় এটাকে এখনই আমি বিলুপ্ত করার পক্ষে মত দিচ্ছি না।তাহলে বিরোধী পক্ষের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস থেকেই যাবে।
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুতে কোনো প্রস্তাব না দিলেও জোটের আরেক শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল(জাসদ) তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখা হলে ৯০দিনের মধ্যে ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করার দাবি জানায়।
শেখ হাসিনাও বলেছিলেন তত্ত্বাবধায়ক থাকবে:-
২০১১সালের ২৭এপ্রিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে বৈঠক করে বিশেষ কমিটি।সংসদ ভবনের কেবিনেট কক্ষে এই বৈঠক শেষে জানানো হয়,স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এ বিষয়ে গণভবনে ব্রিফ করবেন।ফলে আমরা হুড়মুড় করে সবাই গণভবনে ছুটে যাই।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন,তারা তিন মাসের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্বাচন করতে না পারলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা বাতিল এবং আগের সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব দিয়েছেন।একই সঙ্গে তারা সম্ভব হলে বিচার বিভাগের বাইরে থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের বিধান করার পক্ষেও মত দিয়েছেন।তাদের প্রস্তাব,সংসদে সরকারি ও বিরোধী দলের আলোচনা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান নির্বাচিত হবেন। অথবা সরকারি ও বিরোধী দলের পাঁচ জন করে সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত একটি কমিটিই ঠিক করবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান ও অন্য উপদেষ্টা কারা হবেন।
তার মানে,২০১১সালের ২৭এপ্রিল পর্যন্ত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে আওয়ামী লীগের অবস্থান ছিল একরকম-যা কিছুদিনের মধ্যেই পুরোপুরি বদলে যায়।
নাগরিক সমাজের সঙ্গে বৈঠক:-
২০১১সালের ৩মে বিশেষ কমিটির বৈঠক হয় দেশের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে।যাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হয়,তাদের অধিকাংশই ছিলেন শিক্ষক।
বৈঠক শেষে বেরিয়ে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রয়োগের বিষয়টির দিকে লক্ষ্য রাখা উচিত।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রয়োগসীমার ওপর নিয়ন্ত্রণ আনার কথা বলেছি।তার মতে,তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সব উপদেষ্টা নির্দলীয় না হোক অন্তত নিরপেক্ষ হতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ,আ,ম,স আরেফিন সিদ্দিক বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকার নির্ধারিত ৯০কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন করতে ব্যর্থ হলে সংসদ পুনরুজ্জীবিত করে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
জাতীয় অধ্যাপক কবীর চৌধুরী জানান,বৈঠকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে বুদ্ধিজীবীরা নানারকম প্রস্তাব দিয়েছেন।অনেকে বলছেন এই ব্যবস্থার দরকার নেই।অনেকে বলেছেন দুই মেয়াদের পর এই বিধান উঠিয়ে দেওয়া উচিত।তবে এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই গুরুত্বপূর্ণ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড.আকবর আলি খান এই সরকার প্রসঙ্গে বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতিতে সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে।এটি একটি রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়।এটার জন্য বড় দুটি রাজনৈতিক দল একমত হয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করলে কোনো লাভ হবে না,বরং সংঘাত আরও বাড়বে।এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সমঝোতা করে সংশোধন করা উচিত।
আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামালও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রতি মানুষের পূর্ণ আস্থা নেই।এ অবস্থান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।তবে যতদিন এটা বহাল থাকছে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের মনোনীত করতে হবে।প্রধান বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা করার ক্ষেত্রে নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে।এ অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি বলেন,কেয়ারটেকার একটা বিশেষ ব্যবস্থা।যদি এটিকে রাখতেই হয়,তাহলে এর নিয়োগ প্রক্রিয়া বদলাতে হবে।নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে সরকার গঠন করতে হবে।১৬কোটি মানুষের মধ্যে নিশ্চয়ই ১০জন নিরপেক্ষ ব্যক্তি পাওয়া যাবে।
অধ্যাপক আসিফ নজরুল তার প্রস্তাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে রাষ্ট্রপতি যেন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে উপদেষ্টা পরিষদের মতামত নেন, সেরকম বিধান যুক্ত করার প্রস্তাব দেন।
সিনিয়র সাংবাদিক এবিএম মূসা বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়ে এখনও অস্পষ্টতা রয়েছে।এই খণ্ডকালীন সরকারকে নির্দলীয় বলা হলেও নিরপেক্ষ কোথাও উল্লেখ নেই।এই বিষয়টি স্পষ্ট করার জন্য কমিটিকে পরামর্শ দিয়েছি।
বদিউল আলম মজুমদার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস্যুতে সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের নিয়ে একটি প্যানেল তৈরি করার প্রস্তাব দেন।বলেন এই প্যানেলই ঠিক করবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান কে হবেন।
সম্পাদকদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া:-
২০১১সালে ৪মে বিশেষ কমিটি বৈঠক করে জাতীয় দৈনিকের সম্পাদকদের সঙ্গে।তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।যারা এই পদ্ধতি রাখার পক্ষে তারা এর প্রধান হিসেবে বিচারপতিদের বাইরে দলনিরপেক্ষ কোনো ব্যক্তিকে মনোনয়নের ব্যবস্থা রাখার সুপারিশ করেন।কেউ কেউ অবশ্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার সুপারিশ করেন।
প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা থাকা উচিত বলে মত দেন।সিনিয়র সাংবাদিক রিয়াজউদ্দিন আহমেদও এই ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেন,তারা চারটি নির্বাচন করেছে,যেগুলো দেশে বিদেশে গ্রহণযোগ্য হয়েছে এবং পূর্ণ মেয়াদ সরকার থেকেছে।তাছাড়া আমাদের যে রাজনৈতিক সংস্কৃতি,সেখানে রাজনৈতিক দলগুলো যেহেতু পরস্পরকে বিশ্বাস করে না,সুতরাং রাজনৈতিক দলের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না,গ্রহণযোগ্য হবে না।
নিউএজ সম্পাদক নূরুল কবীর বলেন,রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক আস্থাহীনতার কারণেই এটা এসেছে।সুতরাং যতক্ষণ পর্যন্ত একটা দল আরেকটি দলের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে বলে বিশ্বাস না করবে,ততক্ষণ এই ব্যবস্থা থাকতে হবে।যদিও এটা গণতন্ত্রের জন্য অপমানজনক।
তবে এই ব্যবস্থা বাতিলের প্রস্তাব দিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক গোলাম সারওয়ার বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকার গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান। বাস্তবতার কারণেই আপাতত এ পদ্ধতি মেনে নিতে হচ্ছে।সেক্ষেত্রে আগামী এক মেয়াদ পরই এ ব্যবস্থা তুলে দেওয়া উচিত।
একইভাবে জনকণ্ঠ সম্পাদক আতিকউল্লাহ খান মাসুদ বলেন,সারা দুনিয়ার কোথাও তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা নেই।এটি একেবারেই তুলে দিয়ে নির্বাচন কমিশনকেই দায়িত্ব দিতে হবে।
আদালতের রায়ের পরে পরিস্থিতি ভিন্ন:-
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী ইস্যুতে যখন বিশেষ কমিটির এইসব বৈঠক চলছিল,তার মধ্যেই ২০১১সালের ১০মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানসম্বলিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত।ফলে দৃশ্যপট পাল্টে যায়।
১৬মে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠক শেষে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন, সংবিধান সংশোধন বিষয়ে তারা যে প্রতিবেদন সংসদে পেশ করবেন, সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল সংক্রান্ত ত্রয়োদশ সংশোধনীকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অবৈধ বলে আদালতের রায়ের পরে কেউ কেউ এরকমও মত দিয়েছিলেন যে যেহেতু বিশেষ কমিটিতে বিরোধী দলের কোনো সদস্য নেই,তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আরেকটি বিশেষ কমিটি করা দরকার।কিন্তু এই প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে সুরঞ্জিত বলেন,মানুষের মস্তিষ্ক কেবলই উর্বর।এমনিতেই এই বদ্বীপের মানুষের মস্তিষ্কের উর্বরতার খ্যাতি আছে।
এর ১০দিন পরে ২৬মে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে সুরঞ্জিত বলেন,আদালত একদিকে ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ বলে বাতিল করেছেন,আবার বলেছেন যে আগামী দুটি নির্বাচন এর অধীনে হতে পারে। এটা তো সাংঘর্ষিক।এটা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা আমাদের জন্য বেশ অসুবিধাজনক।
আমরা জানতে পারি যে,কমিটি তাদের প্রতিবেদনের খসড়া তৈরি করে ফেলেছে এবং তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিষয়ে কোনো কিছু রাখা হয়নি।বিশেষ কমিটির একাধিক সদস্য বিষয়টি আমাদের নিশ্চিত করেছিলেন।
তত্ত্বাবধায়ক বাতিলের সিদ্ধান্ত হলো কবে?
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের সিদ্ধান্তটি হয় ৩০মে অনুষ্ঠিত বিশেষ কমিটির ২৬তম বৈঠকে।এদিন বিকাল ৪টা থেকে রাত প্রায় পৌনে ৮টা পর্যন্ত সংসদ ভবনের তৃতীয় তলায় প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতার কার্যালয়ে এ দীর্ঘ বৈঠক হয়। অর্থাৎ এই বৈঠকে সংসদ নেতা,প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাও উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম মূলত বোমাটি ফাটান।সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি দ্রুত পায়ে হাঁটতে হাঁটতে বলে দেন যে,তত্ত্বাবধায়ক বাতিল।আবদুল মতিন খসরু ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বলেন,আগামীকাল(৩১মে)দুপুরে মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে ব্রিফ করা হবে।
সাংবাদিকরা দৌড়ে সংসদের টানেলে এসে দাঁড়ান।কমিটির সদস্যরা বের হলেই যাতে ধরা যায়।শেখ সেলিম বের হবার সঙ্গে সঙ্গে সাংবাদিকরা তাকে ঘিরে ধরেন।সেলিম বলেন,আদালত একইসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে বলেছেন এটা অবৈধ,আবার পর্যবেক্ষণে বলেছেন এই ব্যবস্থা আরও দুই মেয়াদ থাকতে পারে।এ দুটি তো মেলে না।আমরা কেন ঝামেলায় যাব?তিনি আরও বলেন,আরও দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে আদালত যা বলেছেন সেটি রায় নয়, অভিমত।আমরা আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
শেখ সেলিমের এই কথা শুনে কমিটির অন্য সদস্যরাও আর ইতস্তত করেননি।আমীর হোসেন আমু,আবদুল মতিন খসরু,আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও রাশেদ খান মেননও একই সুরে কথা বলেন।মতিন খসরু বলেন,আদালতের রায় শিরোধার্য,সবাইকে মানতে হবে।
কমিটির সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেন,আদালতের রায় অনুযায়ী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অসাংবিধানিক।সুতরাং এটা রাখার আর কোনো সুযোগ নেই।তাহলে ভবিষ্যতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন কিভাবে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,নির্বাচন কমিশনের অধীনেই নির্বাচন হবে।এ নিয়ে কোনো সংকট দেখা দেবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল বলেন,সংকট থেকেই সমাধানের পথ বের হবে।
কমিটির একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে তখন আমাদের বলেছিলেন,সদস্যদের অনেকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আদালতের পর্যবেক্ষণ মোতাবেক আরও দুই মেয়াদ রাখার পক্ষে জোর মত দিলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আদালত অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেছেন।একটি অবৈধ সরকার ব্যবস্থার অধীনে আর কোনো জাতীয় নির্বাচন নয়।তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান না রেখেই সংবিধানের খসড়া চূড়ান্ত করার জন্য বলেন।এই ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কমিটির সদস্যদের দীর্ঘ বাহাস হয় বলেও কোনো কোনো সদস্য অফ দ্য রেকর্ড বলেছেন।
পরদিন ৩১মে দুপুরে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে অবশ্য ভিন্ন কথা বলেন।তারা সংবিধান সংশোধনে যে প্রতিবেদন সংসদে পেশ করবেন,সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রসঙ্গে কোনো সুপারিশ থাকবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন,আমরা সামগ্রিকভাবে এ বিষয়টা সংসদের উপর ছেড়ে দিয়েছি।সংসদই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।তবে এটুকু বলতে পারি,রায়ের পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নাই। যেটি নাই সেটিকে আমরা নিয়ে আসতে পারব না।
সংসদে প্রতিবেদন পেশ:-
২০১১সালের ৮জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান লুপ্ত করে এ বিষয়ে আলোচনার পথ উন্মুক্ত রেখে সংবিধান সংশোধনে বিশেষ কমিটির প্রতিবেদন সংসদে পেশ করা হয়।এ সময় কমিটির চেয়ারম্যান সাজেদা চৌধুরী তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্ত করার বিষয়ে বলেন,বিরোধী দল এ বিষয়ে সংসদে এসে কথা বললে সমঝোতার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেতে পারে।
তিনি বলেন,অসহিষ্ণু রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ছিল একটি শান্তিপূর্ণ সমাধান।দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ হলেও এটি গণতন্ত্র পরিপন্থী।তাছাড়া সুপ্রিম কোর্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কিত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছেন।কমিটি এ রায় মেনে নিয়ে তাদের সুপারিশ তৈরি করেছে।তবে অসহিষ্ণু রাজনৈতিক সংঘাত এড়াতে বিরোধী দল সংসদে এসে সাংবিধানিক পন্থায় যে প্রস্তাব রাখবে,তা নিয়ে নতুনভাবে আলোচনা করে সমঝোতার মাধ্যমে সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যেতে পারে বলে কমিটি মনে করে।
কমিটির প্রতিবেদনে ২২নম্বর সুপারিশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করতে ২ক পরিচ্ছেদে(অনুচ্ছেদ ৫৮খ,৫৮গ,৫৮ঘ,৫৮ঙ)বিলুপ্ত করা হয়।একই সঙ্গে ৪৭নম্বর সুপারিশে সংবিধানের ১৫২অনুচ্ছেদ থেকেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা'র সংজ্ঞা এবং অন্যান্য উপদেষ্টার সংজ্ঞাও বাতিল করা হয়।একইভাবে আরও যেসব জায়গায় প্রধান উপদেষ্টা'এবং'উপদেষ্টা'শব্দগুলো আছে সবই বিলুপ্ত করা হয়।
২৫জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপের প্রস্তাব করেই সংবিধান সংশোধন বিল সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ।তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সম্পর্কে তিনি বলেন,এটা সংবিধানে সাংঘর্ষিক।কেননা সংবিধানে উল্লেখ রয়েছে,জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দেশ পরিচালনা করবেন।যে কারণে আদালত সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করেছে।তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা রাখার সুযোগ নেই।
প্রসঙ্গত,১০মে ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে রায় দেওয়া হলেও এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয় ৩জুলাই।কিন্তু তার আগেই ৩০জুন আপিল বিভাগের রায়ের ওপর ভিত্তি করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপ করে সংবিধান করা হয়।
সংসদে বিল পাশ ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া:-
সংসদে সংবিধান সংশোধন বিল পাশের ঠিক আগের দিন ২৯জুন বিলের ওপর আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয় এবং পরদিন ৩০জুন বিলটি সংসদে পাশ হয়ে যায়।
বিল পাশের পরে এ বিষয়ে বক্তব্য দেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।তিনি প্রধান বিরোধী দল বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, আদালতের রায়ের আলোকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করা হয়েছে।তবে বিকল্প কোনো ফর্মুলা থাকলে সংসদে এসে বলুন।অযথা গণ্ডগোল করে জনগণকে কষ্ট দেবেন না।জনগণ আপনাদের ভোট দেয়নি।তাই ক্ষুব্ধ হয়ে জনগণকে কষ্ট দেওয়ার অর্থ হয় না।ভাগ্যে থাকলে আবার হয়তো ক্ষমতায় আসতে পারবেন।
তিনি বিরোধী দলের উদ্দেশে সূরা আল ইমরানের ২৬নম্বর আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন,ভাগ্যে থাকলে আপনারা ক্ষমতায় আসতে পারবেন। ভাগ্যে না থাকলে পারবে না।তিনি বিরোধী দলকে এই আয়াতটি ভালোভাবে পড়ার আহ্বান জানান।