অনলাইনডেস্ক:-এক দফা দাবি আদায়ে রাজধানীকে কেন্দ্র করে চূড়ান্ত পরিকল্পনা নিচ্ছে বিএনপি।দেশব্যাপী সমাবেশ ও রোডমার্চ কর্মসূচি শেষে রাজধানী ঢাকা মহানগরীকে এবার আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করতে চায় দলটি।
এ জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন স্থাপনা ঘেরাও, গণ অবস্থান,হরতাল,অবরোধ এমনকি‘অসহযোগ’-এর মতো কঠিন কর্মসূচি ঘোষণার কথাও চিন্তাভাবনায় রয়েছে।
ঢাকা মহানগরী(উত্তর ও দক্ষিণ)বিএনপিসহ আশপাশ জেলাগুলোর সর্বস্তরের নেতা-কর্মীকে সর্বাত্মক প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার আগে কঠোর কোনো কর্মসূচিতে যাবে না বিএনপি ও মিত্ররা।
দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে,ঢাকার কর্মসূচি সফল করতে ঢাকা, গাজীপুর,নারায়ণগঞ্জ,মুন্সীগঞ্জ ও মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সব ইউনিটের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজও প্রায় শেষ।
১৮অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় জনসভা থেকে‘এক দফা দাবি’মেনে নিতে সরকারকে আলটিমেটাম বেঁধে দেওয়ার কথা রয়েছে।নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যে দাবি না মানলে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই শেষ ধাপের কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে বিএনপি।
কর্মসূচির বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,রোডমার্চ ও সমাবেশ অনেক করেছি।আর কোনো রোডমার্চ নেই।এখন থেকে সব ঢাকায় হবে।রাজধানীতেই সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
দুর্গাপূজার আগে আমরা কোনো কঠোর কর্মসূচিতে না গেলেও এর মধ্যে সরকার পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে না দিলে জনগণই সেই ক্ষমতা দখল করবে।
বিএনপির একাধিক সূত্রে জানা গেছে,আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচি নিয়ে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির দফায় দফায় বৈঠক ছাড়াও গণতন্ত্র মঞ্চসহ সমমনা জোট ও বিভিন্ন দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গেও ধারাবাহিক বৈঠক শেষ করেছে দলটি।
এসব বৈঠকে সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ও যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি কার্যকরের বিষয়টিসহ চলমান আন্দোলনের শেষ ধাপের কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।
সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপের বিষয়টি বিরোধী দলের অনুকূলে রয়েছে মনে করলেও আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলতে হলে রাজপথেই তাদের কঠোর ভূমিকা পালন করতে হবে বলে একমত পোষণ করেন শীর্ষ নেতারা।সে ক্ষেত্রে আন্দোলনের ধরন,‘ডু অর ডাই’নীতির মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার বিষয়েই সবাই মত ব্যক্ত করেন।
এ ছাড়া দীর্ঘ ১৭বছর ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি এ আন্দোলনকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য‘মরণপণ’লড়াই হিসেবেই নিয়েছে।সেজন্য সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,আর এখানে সেখানে ঘোরাফেরা করে কোনো লাভ হবে না।সরকারের সময় শেষ।তলে তলে,ভিতরে ভিতরে কিংবা ওপরে ওপরে কোনো কিছুতেই আর কাজ হবে না।
বিদায় তাদের নিতেই হবে।জনগণের ধৈর্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে।দেশের সর্বস্তরের মানুষ এখন তাদের মুক্তির প্রহর গুনছেন।আশা করি খুব অল্প সময়ের ভিতরেই পরিবর্তন আসবে।লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির(এলডিপি)প্রেসিডেন্ট কর্নেল(অব.)ড.অলি আহমদ বলেন,রাজনীতিতে অত্যন্ত কঠিন সময় যাচ্ছে।
সরকারের জন্য এটি রীতিমতো বিপজ্জনক।অবিলম্বে সরকারের একগুঁয়েমি মনোভাব পরিহার না করলে দেশের জন্য তা মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে।
গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষস্থানীয় নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মনে হচ্ছে ক্ষমতাসীন সরকারের সময় ঘনিয়ে এসেছে।কোনো চটকদার বক্তব্যেই আর কাজ হবে না।কারণ মানুষ সত্যি সত্যিই আর এ সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
জানা গেছে,২০১৪ ও ২০১৮সালের আন্দোলনে ব্যর্থতার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা মাথায় রেখেই এবারের আন্দোলনের শেষ ধাপের সব কর্মসূচি রাজধানী ঢাকাকেন্দ্রিক সাজানো হচ্ছে।
এ ছাড়া নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন,ঢাকায় জোরালো আন্দোলন ছাড়া এ সরকারের পতন কোনোক্রমেই সম্ভব নয়।অতীত আন্দোলনের এসব তিক্ত অভিজ্ঞতা বিবেচনায় রেখেই এবার রাজধানীকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সাহসিকতা•সততা•সাংবাদিকতা:-
তোকদার নিউজ//টি,এন-www.tokdernews.com
সকল সংবাদ পেতে ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন…