অনলাইনডেস্ক:- বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলো ক্রমেই ডিজেল ও পেট্রল ইঞ্জিনচালিত গাড়ির বিক্রি থেকে সরে আসছে।এই দেশগুলো নিজেদের সড়কগুলোতে বৈদ্যুতিক গাড়ির সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।কারণ পরিবেশদূষণ ও কার্বন নিঃসরণ রোধে ইলেকট্রিক কারই হতে যাচ্ছে ভবিষ্যতের বাহন।এ তালিকায় নাম আছে বাংলাদেশেরও। ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে,দূষণ কমাতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২৭টি দেশ বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাংলাদেশের সড়ক-মহাসড়কগুলোতে এখন ৫০টিরও বেশি বৈদ্যুতিক কার বা ইলেকট্রিক ভেহিকল(ইভি)চলছে।এর ৯৮শতাংশই চলছে ঢাকায়, যার মধ্যে আছে বিশ্বখ্যাত টেসলা,অডি,পোরশে ও মার্সিডিজ ব্র্যান্ডের ইভি কার। এরই মধ্যে চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে ইভি কার নির্মাণে কারখানা স্থাপন করা হয়েছে।এ-সংক্রান্ত নীতিমালাও তৈরি হয়েছে। ঢাকায় স্থাপন করা হয়েছে ইভি চার্জিং স্টেশন।আগামী বছরের মধ্যে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আরও বেশ কয়েকটি চার্জিং স্টেশন নির্মাণের পরিকল্পনা চলছে।
ইভি কার আমদানি ও উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,দেশে দুই-তিন বছর ধরে ইভি কারের আমদানি শুরু হয়।প্রথম দিকে গাড়িগুলো নিবন্ধনের ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা ছিল।এর মধ্যে কিছু গাড়ির নিবন্ধন এখনো শেষ হয়নি। বৈদ্যুতিক এই গাড়ি একবার চার্জ দিলে চালানো যায় ৩০০কিমি পর্যন্ত।ইলেকট্রিক গাড়ি সামান্য বিদ্যুৎশক্তিতে চলে বলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না।এই গাড়ি চালাতে কোনো ফুয়েল ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয় না।এগুলো কার্বন নিঃসরণ করে না।ফলে বায়ুদূষণ হয় না। এর সুবিধা হচ্ছে,ইঞ্জিনের গাড়ির চেয়ে এগুলো ৩০শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয়ী। বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের দাম যেমন বাড়ছে,একই সঙ্গে এর মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।এ জন্য ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে ইভি কারের দিকেই হাঁটতে হবে।বাসা-বাড়িতে একটি ইভি কার পরিপূর্ণ চার্জ দিতে ১হাজার টাকার কম খরচ হয়।আর এই পরিমাণ অর্থে একটি ইভি কার ৩০০কিমি দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে।কিন্তু এই দূরত্ব অতিক্রম করতে একটি তেলচালিত ইঞ্জিন গাড়ি চালাতে প্রায় ৫হাজার টাকা খরচ হয়।এই হিসাবে ইভি কার বেশ সাশ্রয়ী।এই গাড়ি চার্জের জন্য বাসায় যেমন চার্জিং সেটআপ করা যাবে,একই সঙ্গে দ্রুত চার্জের জন্য ব্যবসায়িক চার্জিং স্টেশন থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে চার্জিং স্টেশনে চার্জ দেওয়ার ট্যারিফ নির্ধারণ করা হয়েছে।এরই মধ্যে রাজধানীর তেজগাঁওয়ের চার্জিং স্টেশনে অনেকে নিজের গাড়ি ফাস্ট চার্জ করে নিচ্ছেন।সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ ইলেকট্রিক মোটরযান নিবন্ধন ও চলাচল-সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরিও করেছে।তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন,গোটা বিশ্বে ইলেকট্রিক গাড়ির দাম অনেক কম থাকলেও বাংলাদেশে এখনো এই গাড়ি আমদানিতে ১০০শতাংশ ইমপোর্ট ডিউটি দিতে হয়।এ জন্য আমদানি করা ইভি গাড়ির দাম এখনো বেশি।
ইভি ব্যাটারি চার্জ করতে দেশে প্রথমবারের মতো চার্জিং স্টেশন স্থাপন করেছে এখন চার্জ।রাজধানীর তেজগাঁও বাণিজ্যিক এলাকায় অডি বাংলাদেশ-এর কার্যালয় প্রাঙ্গণে সম্প্রতি স্টেশনটি স্থাপন করা হয়েছে। চার্জিং স্টেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিনিয়র বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন,২০৩০থেকে ২০৩৫সালের মধ্যে বাংলাদেশে জ্বালানি তেলচালিত কোনো পরিবহন থাকবে না।সরকার এই পরিকল্পনাতেই এগিয়ে যাচ্ছে।এর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে এই চার্জিং স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে।বর্তমানে দেশের রাস্তায় চলছে অডির ইলেকট্রিক গাড়ি ই-ট্রন।প্রোগ্রেস মোটরস ইমপোর্টস লিমিটেড এ গাড়ি আমদানি করে বাজারজাত করছে।প্রতিষ্ঠানটি দেশের বাজারে অডির একমাত্র পরিবেশক।এর একটি গাড়ির দাম ১কোটি ৬৯লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,২০২৪সালের মধ্যে সারা দেশে ১১টি চার্জিং স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।এসব স্টেশনে ২০থেকে ৩০মিনিট গাড়ির চার্জ ১০শতাংশ থেকে ১০০শতাংশ হয়ে যাবে।১০০শতাংশ চার্জে একটি গাড়ি চলবে প্রায় ৫০০কিমি। বাংলাদেশ এ ধরনের ব্যাটারিচালিত গাড়ির জন্য আদর্শ জায়গা।কারণ দেশে ৫০০কিমি রাস্তা খুব কমই আছে।প্রোগ্রেস মোটরস ইমপোর্ট লিমিটেডের কান্ট্রি লিড(সেলস)সাফায়েত বিন তৈয়ব বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন,বর্তমানে আমরা অডির একটি মডেলই বাংলাদেশে বিক্রি করছি।চলতি বছর জানুয়ারি থেকে অডির ইভি কার বিক্রি শুরু করেছি।গত আট মাসে আমরা ৪০টি গাড়ি বিক্রি করেছি।সে হিসাবে মাসে পাঁচটি গাড়ি বিক্রি করেছি।ক্রেতার কাছ থেকে বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি।ইভি কার বিষয়ে কৌতূহলী ক্রেতারা প্রতিদিনই আমাদের কাছে আগ্রহ প্রকাশ করছেন।এ বছরের শেষ নাগাদ আমাদের আরও নতুন ইভি কার আসছে।দুই-তিন বছরের মধ্যে আমাদের হাতে আরও চার-পাঁচটি নতুন মডেলের অডির ইভি গাড়ি থাকবে বলে আমরা আশাবাদী। ঢাকার বাইরে কুমিল্লা,চট্টগ্রাম,কক্সবাজারসহ সারা দেশে ১০থেকে ১১টি চার্জিং স্টেশন আগামী বছরের শেষ নাগাদ তৈরি করার প্রস্তুতি চলছে।বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনে বাংলাদেশে এরই মধ্যে কারখানা স্থাপিত হয়েছে।চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরে এ কারখানা স্থাপন করা হয়েছে।বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এ জন্য ১০০একর জায়গা পেয়েছে।২০১৮সালে কারখানার কাজ শুরু হয়েছে।চীন, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইতালিকে অংশীদার করে দেশের বাজারে বৈদ্যুতিক গাড়ি আনতে চায় বাংলাদেশ অটো ইন্ডাস্ট্রিজ।
★প্রকাশক:- মোঃ মোশারফ হোসেন তোকদার।
★ব্যবস্থাপনা পরিচালক:- মোঃ এম,খোরশেদ আলম,সভাপতি প্রেসক্লাব পীরগাছা,রংপুর বিভাগ।
© All rights Reserved © 2020 গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত এই ওয়েবসাইটি Tokdernews.com বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পোর্টাল।