অনলাইনডেস্ক:- বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট)সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের মরদেহ উদ্ধারের পর ধারণা করা হচ্ছিলো তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার।তবে দীর্ঘ ৩৮দিনের তদন্ত শেষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, ফারদিন হত্যাকাণ্ডের শিকার হননি,হতাশা থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি)জানায়,নিখোঁজ হওয়ার আগে ফারদিন ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় একা একাই ঘুরে বেড়িয়েছেন।পারিপার্শ্বিক বিষয় দেখে মনে হয়েছে তিনি আত্মহত্যা করবেন সিদ্ধান্ত নিয়েই বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন।সবকিছু মিলিয়েই আমরা সিদ্ধান্তে এসেছি।
সাংবাদিকদের সঙ্গে ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনাটি আমরা তদন্ত করেছি।তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আমরা তার মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বলেছি। বান্ধবী বুশরাকে রামপুরায় নামিয়ে দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ানোর ব্যাখ্যা দিয়েছি।কিন্তু তার সঙ্গে কেউ ছিলেন না,তিনি একা একাই বিভিন্ন স্থানে ঘুরেছেন।
হারুন অর রশীদ বলেন,যাত্রাবাড়ী থেকে লেগুনায় করে ডেমরার সুলতানা কামাল সেতুর একপাশে তিনি নামেন। কিন্তু তিনি চনপাড়ার দিকে যাননি,সেখানে কোনো ঘটনাও ঘটেনি।ঘটনার ৩৮দিন তদন্ত শেষে এটিকে আমরা সুইসাইডাল ঘটনা বলেছি।এ বিষয়ে বুয়েটের ৪০জন শিক্ষার্থী এসে তিন ঘণ্টা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আমরা তার পরিবার,বন্ধু-আত্মীয়দের বলেছি,ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন।
ডিবি প্রধান আরও বলেন,ফারদিন সেদিন রাতে বাবুবাজার ব্রিজ ও সুলতানা কামাল ব্রিজে যান।অথচ গত দুই বছরেও তিনি এসব এলাকায় যাননি।ফারদিন দুই বছরে ৫২২টি নম্বরে কথা বলেছেন,আমরা সবার কাছে খোঁজ-খবর নিয়েছি।
ফারদিন বিভিন্ন নোবেল বই পড়তেন উল্লেখ করে হারুন অর রশীদ বলেন,তিনি বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বিভিন্ন সময় হতাশার কথা বলেছেন।এক বান্ধবীকে লিখেছেন-৩০বছরের বেশি কারো বাঁচার দরকার নাই।আবার কাউকে লিখেছেন-যদি মারা যাই,বন্ধু সাজ্জাদ কষ্ট পাবে।আরেকজনকে লিখেছেন-কোন একদিন শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখবে আমি আত্মহত্যা করেছি।ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন শুক্রবারেই।
ডিবি প্রধান বলেন,ফারদিনের বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে,তিনি হতাশায় ভুগছিলেন।তাছাড়া ফারদিনের মরদেহে কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না,ধস্তাধস্তির আলামত নেই।তার মোবাইল-টাকা পকেটে ছিল।হাতে ঘড়ি ছিল, কোনকিছু খোয়া যায়নি।বুয়েটের ৪০শিক্ষার্থীও এসব আলামত দেখে একমত পোষণ করেছেন।
হারুন অর রশীদ বলেন,ফারদিন ইন্ট্রোভার্ট ছিলেন।তার রেজাল্ট খারাপ হচ্ছিল,কিন্তু কাউকে কিছু বলেননি। ফারদিন লিখেছেন,৯৫ভাগ মানুষের জীবন পরিবার দ্বারা সীমাবদ্ধ।হয়তো পরিবার তাকে বাসায় থাকতে বলতেন, কিন্তু তিনি চাচ্ছিলেন না।সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছাই,এখানে মার্ডারের কোনো লক্ষণ নেই।যেসব ব্রিজে তিনি গিয়েছেন সেদিন রাতে এর আগে দুই বছরেও সেই সব এলাকায় যাননি।
এক প্রশ্নের জবাবে ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন,আমরা গতকালই তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি এ বিষয়ে। কোনো মানুষ যদি দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যা করে সেখানে তো সাক্ষী থাকে না।পারিপার্শ্বিক বিষয় দেখে মনে হয়েছে, তিনি আত্মহত্যা করবেন সিদ্ধান্ত নিয়েই বিভিন্ন স্থানে ঘুরে বেড়িয়েছেন।সবকিছু মিলিয়েই আমরা সিদ্ধান্তে এসেছি।
★প্রকাশক:- মোঃ মোশারফ হোসেন তোকদার।
★ব্যবস্থাপনা পরিচালক:- মোঃ এম,খোরশেদ আলম,সভাপতি প্রেসক্লাব পীরগাছা,রংপুর বিভাগ।
© All rights Reserved © 2020 গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত এই ওয়েবসাইটি Tokdernews.com বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পোর্টাল।