অনলাইন ডেস্ক:- তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভয়াবহ ধস নেমেছে।বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি,রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, আন্তর্জাতিক পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা কারণে বিশ্বব্যাপী শুরু হওয়া মন্দাভাবের প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক আয়ের প্রধান এ খাতে।গত এক মাসে অর্ডার কমেছে প্রায় ৩০শতাংশ।বিশ্বমন্দা পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে এ শিল্পে আরও ভয়াবহ প্রভাব পড়ার শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির(বিজিএমইএ)প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন,বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মূল্যস্ফীতি ও মন্দাভাবের প্রভাব পড়েছে পোশাকশিল্পে।গত এক মাসে দেশের গার্মেন্টগুলোর অর্ডার কমেছে ২৫থেকে ৩০শতাংশ।আগামী মার্চের আগে তার উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না।তাই সরকারের কাছে আমাদের আবেদন থাকবে,ব্যাংকঋণ মওকুফসহ এ শিল্প রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার।
জানা যায়,বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে ধরা হয় ইউরোপের দেশগুলো ও যুক্তরাষ্ট্রকে।করোনা মহামারির পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এ দেশগুলোয় অনৈতিক মন্দাভাব দেখা দিয়েছে।ওইসব দেশে দেখা দিয়েছে মূল্যস্ফীতি।এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় অন্যান্য জিনিসপত্রের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।এতে চরম অর্থনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে ওই দেশগুলোয় যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে আমাদের দেশের পোশাকশিল্পে।চট্টগ্রাম বিজিএমইএর দেওয়া তথ্যমতে,চট্টগ্রামে রপ্তানিকারক তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে দুই শর মতো।এ ছাড়া বড় পোশাক কারখানার সঙ্গে চুক্তির ভিত্তিতে কাজ করে এমন কারখানা রয়েছে আড়াই শর মতো।সব মিলিয়ে চট্টগ্রামে ছোট-বড় তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে সাড়ে চার,শ।চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীদের মতে,পোশাক কারখানাগুলোয় অর্ডার কমে যাওয়ায় অনেক মালিক যথাসময়ে শ্রমিকের বেতন পরিশোধ করতে পারছেন না।তার ওপর জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় ৩৫শতাংশ সার্ভিস চার্জ বাড়িয়েছেন ডিপো মালিকরা।এতে ব্যয় বেড়েছে।অথচ বাড়তি দাম পাওয়া যাচ্ছে না।ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে।এতে কারখানার শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য ব্যয় নির্বাহে হিমশিম খেতে হচ্ছে মালিকদের ২০২১-২২অর্থবছরে তৈরি পোশাক খাত থেকে রপ্তানি আয় হয়েছে ৪৩বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চলতি অর্থবছরে রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৪৬বিলিয়ন মার্কিন ডলার ধরা হয়েছে।গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি রপ্তানি করে।কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে মে মাস থেকে এ ধারা অব্যাহত থাকেনি।এপ্রিলের ৩দশমিক ৯৩বিলিয়ন ডলার থেকে মে মাসে তৈরি পোশাকের চালানের পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৩ দশমিক ১৬বিলিয়ন ডলারে।বর্তমানেও সেই ধারাবাহিকতায়ই কমছে পোশাক রপ্তানি।