অনলাইন ডেস্ক:- সামরিক সরকারের আমলে ইংরেজি ভাষায় প্রণীত দি গভর্মেন্ট প্রাইমারি স্কুল টিচার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অর্ডিন্যান্স ১৯৮৫রহিত করে বাংলা ভাষায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন,২০২২বিলটি সংসদে উত্থাপিত হয়েছে।
সোমবার বিলে শিক্ষক ও তাদের পোষ্যদের চিকিৎসা ব্যয় নির্বাহে আর্থিক সহায়তা,সন্তানদের উচ্চ শিক্ষায় উপবৃত্তি প্রদান,পোষ্যদের কারিগরি ও পেশাগত প্রশিক্ষণ গ্রহণে সহায়তা,মৃতদেহ পরিবহনে যৌক্তিক খরচ প্রদান এবং আকস্মিক/প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হলে আর্থিক সহায়তা প্রদানের বিধান রাখা হয়েছে।
ডেপুটি স্পিকার মো:শামছুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সংসদের ২০তম অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো:জাকির হোসেন বিলটি উত্থাপন করেন।পরে বিলটি পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে প্রেরণ করা হয়।
বিলে বলা হয়েছে,চাকরিরত অবস্থায় কোনো শিক্ষকের মৃত্যু হলে যদি ওই শিক্ষকের অপ্রাপ্তবয়স্ক,প্রতিবন্ধী, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন বা তৃতীয় লিঙ্গের সন্তান থাকে,তা হলে উক্ত সন্তান প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত তার লেখাপড়ার খরচ ট্রাস্টের তহবিল হতে প্রদান করা হবে।
বিলে দি গভর্মেন্ট প্রাইমারি স্কুল টিচার ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট অর্ডিন্যান্স-এর অধীনে পরিচালিত সব কার্যক্রমের বৈধতা(হেফাজত)দেওয়া হয়েছে।এতে বলা হয়েছে, রহিতকরণ সত্ত্বেও,উক্ত অর্ডিন্যান্স-এর অধীনে কৃত কোনো কার্য,গৃহীত কোনো ব্যবস্থা বা সূচিত কোনো কার্যধারা এই আইনের অধীন কৃত,গৃহীত বা সূচিত হয়েছে বলে গণ্য হবে।এছাড়া অর্ডিন্যান্স-এর অধীনে গঠিত তববিল,সকল সম্পদ,ঋণ ও দায়,সুবিধা,স্থাবর ও অস্থাবর সকল সম্পত্তি,নগদ ও ব্যাংকে গচ্ছিত অর্থ,এবং এতদ্সংশ্লিষ্ট সব হিসাব বই,রেজিস্টার,রেকর্ডপত্রসহ অন্যান্য সব দলিল দস্তাবেজ এবং অন্য সব দাবি এই আইনের অধীন গঠিত তহবিল,সম্পদ,ক্ষণ ও দায়, সুবিধা,সম্পত্তি,অর্থ,রেজিস্টার,দলিল-দস্তাবেজ এবং দাবি হিসেবে গণ্য হবে।একইভাবে জারিকৃত কোনো মঞ্জুরি আদেশ এই আইনের সহিত সামজস্যপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে,এই আইনের অধীন জারিকৃত বলে গণ্য হবে।
এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে,সরকার,সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা,বিধি প্রণয়ন করিতে পারবে।
বিলে তিন বছর মেয়াদের জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ট্রাস্টের চেয়ারম্যান,অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা ভাইস চেয়ারম্যান ও অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ট্রাস্টের কোষাধ্যক্ষ-এর দায়িত্ব পালন করবেন।এছাড়া কমিটিতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়,জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ,সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়,মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগসহ প্রতিটি বিভাগ থেকে একজন করে এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকা থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, The Government Primary School Teachers Welfare Trust Ordinance ১৯৮৫সামরিক সরকারের আমলে ইংরেজি ভাষায় প্রণীত একটি অধ্যাদেশ।এ অধ্যাদেশের আওতায় দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও তাদের পোষ্যদের কল্যাণে এ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।সে পরিপ্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নার্থে বর্তমান প্রেক্ষাপট বিবেচনায় উক্ত অর্ডিন্যান্স-এর কতিপয় ধারা সংশোধন ও পরিমার্জনপূর্বক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক এ আইন যুগোপযোগী ও হালনাগাদ করে নতুনভাবে বাংলা ভাষায় বিলটি প্রণয়ন করা হয়েছে।