অনলাইন ডেস্ক:- নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকারসহ নানা দাবিতে সক্রিয় বিএনপি চলমান বিভাগীয় গণসমাবেশ শেষে নতুন কর্মসূচিতে যাবে।১০ডিসেম্বর ঢাকায় গণসমাবেশের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৯বিভাগীয় গণসমাবেশ।বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে,বিভাগীয় গণসমাবেশের পর নতুন বছরের শুরু থেকে সরকারবিরোধী দলগুলো নিয়ে যুগপৎ কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি।দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত চলবে আন্দোলন।বাকি বিভাগীয় গণসমাবেশে বাধা না দিয়ে সরকার নমনীয় থাকলে এখনই হার্ডলাইনে যাবে না দলটি।ঢাকার সমাবেশ থেকে দাবি আদায়ে আলটিমেটাম দেওয়া হতে পারে।সরকার কঠোর হলে বড় কর্মসূচি দেওয়া হবে।রোডমার্চ’কিংবা‘লংমার্চের’মতো কর্মসূচি দিয়ে সরকার পতনের এক দফা আন্দোনে যাবে।বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন,এ সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে।নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করতে হবে।সেই সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন গঠন হবে।সেই কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন হবে।সেই নির্বাচনে জনগণের সরকার তৈরি হবে।অন্যথায় জনগণ আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাবে।যুগপৎ আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন,এর রূপরেখা শিগগিরই আসবে।বিএনপির নেতারা বলছেন,নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।এই ইস্যু ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে তারা সরকারের সঙ্গে আলোচনা কিংবা সংলাপে যাবেন না।বিএনপির সূত্র অনুযায়ী,ডিসেম্বরে শুরু হওয়া টানা আন্দোলন ২০২৩সালের মাঝামাঝিতে ভিন্ন রূপ নিতে পারে।তারা বলছেন,দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের এক বছরের কিছু বেশি সময় থাকলেও এখনই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি।এখনই রাজপথে শক্তির জানান দিচ্ছেন তারা।এরই মধ্যে চারটি বিভাগীয় সমাবেশ সফল করেছেন তারা।বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে ব্যাপক জনসমাগম ঘটেছে।তৃণমূল নেতা-কর্মীদের দৃঢ়তা ও সাহসিকতায় উজ্জীবিত দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।তৃণমূলের এমন মনোবলে চূড়ান্ত আন্দোলন নিয়েও আশাবাদী দলটির হাইকমান্ড।তারা বলছেন,বিরোধী দলগুলোকে সঙ্গে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলনে গেলে সব দাবি আদায় হবে।জানা গেছে, বিএনপি বিরোধী দলগুলোকে যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা দেবে এবং জাতির সামনে‘রাষ্ট্র মেরামতের রূপরেখা’হাজির করবে।রূপরেখায় উল্লিখিত ইস্যুগুলোর মধ্যে রয়েছে-বর্তমান সরকারের পদত্যাগ,নিরপেক্ষ বা অন্তর্বর্তীকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাস্তবায়ন,নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন,ইভিএম বাতিল,আরপিও সংশোধন,দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি,জ্বালানি,বিদ্যুতের সংকট,শেয়ারবাজার,ব্যাংক লুট,বেগম খালেদা জিয়া ও রাজনৈতিক বন্দিদের মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তি,ডিজিটাল আইন,১৯৭৪সালে তৈরি কিছু আইন বাতিল,১৫বছরে সংঘটিত গুম-খুনের বিচারের বিষয়গুলো উল্লেখযোগ্য।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন,সময়সীমা দিয়ে তো আন্দোলন শুরু করা যায় না।আমরা ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রোগ্রামে আছি।এরপর বলা যাবে নতুন কী কর্মসূচি আসবে।একই কথা বলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।তিনি বলেন,বিভাগীয় সমাবেশ শেষে অবশ্যই নতুন কর্মসূচি আসবে।বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বলেন,বিএনপির সঙ্গে আমরা আলোচনায় একমত হয়েছি-তাদের সঙ্গে বৃহত্তর যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে থাকব।জাতীয় পার্টি(জাফর)যুগ্ম মহাসচিব এ এস এম শামীম বলেন,বিভাগীয় সমাবেশের মধ্য দিয়ে জোটপ্রধান বিএনপি চূড়ান্ত আন্দোলনের রিহার্সেল দিচ্ছে।গণসমাবেশে বিএনপি দেশবাসীকে সম্পৃক্ত করে ইস্পাত কঠিন আন্দোলন গড়ে তুলছে।বিএনপির একক কর্মসূচি শেষে আশা করি নতুন বছরের শুরু থেকে যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে সব দাবি আদায় হবে।বিএনপি মাস তিনেক ধরে টানা কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে।সারা দেশের গ্রামপর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশের পর ঢাকা মহানগরে অঞ্চলভিত্তিক সমাবেশ করা হয়েছে।ঢাকা মহানগরের কর্মসূচি শেষ করে বিভাগীয় গণসমাবেশের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।এরই মধ্যে ১২অক্টোবর চট্টগ্রাম দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়।১৫অক্টোবর ময়মনসিংহ,২২অক্টোবর খুলনা,২৯অক্টোবর রংপুরে গণসমাবেশ হয়।৫নভেম্বর বরিশাল,১২নভেম্বর ফরিদপুর,১৯নভেম্বর সিলেট,২৬নভেম্বর কুমিল্লা,৩ডিসেম্বর রাজশাহী এবং সবশেষে ১০ডিসেম্বর ঢাকায় হবে মহাসমাবেশ।এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন,যুগপৎ আন্দোলনের রূপরেখা ঠিক করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ চলছে।দ্রুতই রূপরেখা চূড়ান্ত হবে।এ ছাড়া বিভাগীয় সমাবেশ বাস্তবায়নে কাজ চলছে।