বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৩৫ অপরাহ্ন
নতুন আরেক আতঙ্কের নাম অনলাইন জুয়া খেলা যাচ্ছে খোয়া কোটি কোটি টাকা
-
Update Time
মঙ্গলবার, ১৮ অক্টোবর, ২০২২
-
২১৪
Time View
নতুন আরেক আতঙ্কের নাম অনলাইন জুয়া খেলা যাচ্ছে খোয়া কোটি কোটি টাকা
অনলাইন ডেস্ক :- দেশে নতুন আতঙ্কের নাম অনলাইন জুয়া।এক ধরনের কৌতূহল থেকে তরুণ প্রজন্ম আকৃষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন জুয়ার সাইটে।পাঁচ-দশ হাজার টাকার বিনিয়োগে শুরু করে লোভে পড়ে একপর্যায়ে খোয়াচ্ছে লাখ লাখ টাকা।জুয়ার এসব সাইটের অধিকাংশ পরিচালনা করা হচ্ছে রাশিয়া, ভারত,মালয়েশিয়া,ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশ থেকে।বিদেশ থেকে পরিচালিত এসব সাইট পরিচালনা করছে বাংলাদেশের এজেন্টরা।জুয়ায় বিনিয়োগ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে বিদেশে।
জুয়ায় আর্থিক লেনদেনের মাধ্যম :-লেনদেনের সহজ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে বাংলাদেশি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস(এমএফএস)।সবচেয়ে অবাক করা বিষয়-রাশিয়া থেকে পরিচালিত জুয়ার সাইট বেটউইনার(betwinner)ও 1xbet-সহ একাধিক সাইটে বাংলাদেশিদের লেনদেনের জন্য মোবাইল ব্যাংকিং বিকাশ,নগদ,রকেট ও উপায় যুক্ত।এছাড়া রয়েছে ব্যাংকের মাধ্যমেও পেমেন্ট করার সুযোগ।ব্যাংক এশিয়া, ব্র্যাক ব্যাংক,ইসলামী ব্যাংক,সিটি ব্যাংক,ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেড ও ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে লেনদেন করা যায় এসব সাইটে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে,মোবাইল ব্যাংকিং খাতে দেশে নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা ১১কোটি ৮লাখ ৯৩হাজার ৩৩০। ২০২১-২২অর্থবছরে বিকাশ,নগদ,রকেট,এমক্যাশসহ মোট ১৫টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে ৯লাখ ৯০হাজার কোটি টাকার লেনদেন করেছে।আর ওই অর্থবছরে জাতীয় বাজেট পেশ করা হয় ৬লাখ ৩হাজার ৬৮১কোটি টাকা।অর্থাৎ,জাতীয় বাজেটের দেড় গুণের বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।শুধু গত জুনেই মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছে ৯৪হাজার ২৯৩কোটি টাকা।
ফেসবুকে বাংলায় বিজ্ঞাপন,মডেল সাকিব আল হাসান :-জুয়া খেলা বেশি করে সবার মধ্যে ছড়িয়ে দিতে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে জুয়ার সাইটের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে বাংলায়।অনলাইন ক্যাসিনোর অ্যাপ ইনস্টলের জন্যও দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন অফার।এমনকি বিজ্ঞাপনে বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের ছবিও ব্যবহার করা হচ্ছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়,সারাদেশেই ছড়িয়ে পড়েছে এই অনলাইন ক্যাসিনো।তবে এসব ক্যাসিনোর মালিক কারা বা কোথা থেকে পরিচালিত হচ্ছে,সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে কোনো তথ্য নেই।এসব অ্যাপের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কারিগরি সক্ষমতার অভাব রয়েছে নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের।তারা বলছে,বিদেশ থেকে অনলাইন ক্যাসিনো পরিচালিত হওয়ায় এগুলো ঠেকানো সহজ নয়।
কয়েকটি ক্যাসিনোর ফেসবুক পেজে দেওয়া রয়েছে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর।এগুলোতে যোগাযোগ করেও তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।বরং টাকার বিনিময়ে গ্রুপের সদস্য হওয়ার শর্ত দেওয়া হয়েছে।চাওয়া হয়েছে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর,নাম,বয়স,জন্ম তারিখ ও মোবাইল ফোন নম্বর।এসব তথ্য দিলেই মেলে গ্রুপের সদস্য হওয়ার অনুমতি।
জুয়ার সাইট বন্ধ করেও মিলছে না সমাধান :-বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের(বিটিআরসি)নির্দেশে ২০১৯সালে বন্ধ করা হয় অনলাইনে জুয়া খেলার ১৭৬টি সাইট।২০২২সালে এসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে দেশে অনলাইনে জুয়া খেলার প্রবণতা বাড়ছে জানিয়ে তা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
চলতি মাসের ১০তারিখ ৩৩১টি অনলাইন জুয়ার সাইট বন্ধ করে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের(বিটিআরসি)ডিজিটাল নিরাপত্তা সেল।সেলটির নিয়মিত নজরদারির অংশ হিসেবে এসব অবৈধ সাইট বন্ধ করা হয়।
এছাড়া,আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান সার্চ ইঞ্জিন গুগল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনলাইন জুয়া বা বাজি সংক্রান্ত ১৫০টি গুগল অ্যাপস বন্ধের জন্য রিপোর্ট করা হলে এরই মধ্যে গুগল কর্তৃপক্ষ প্লে স্টোর থেকে ১৪টি অ্যাপস বন্ধ করেছে এবং অবশিষ্ট অ্যাপস বন্ধের জন্য যাচাই-বাছাইসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে।
একই সঙ্গে ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে জুয়া খেলার ওয়েবসাইট ও গুগল অ্যাপসের প্রচার এবং অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ায় এ ধরনের ২৭টি ফেসবুক লিংক,৬৯টি ইউটিউব লিংক বন্ধের জন্য রিপোর্ট করা হয়।এর মধ্যে ১৭টি ফেসবুক লিংক ও ১৭টি ইউটিউব লিংক বন্ধ করা হয়েছে।অবশিষ্ট লিংক বন্ধের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
যা বলছেন অনলাইন জুয়াড়িরা :-অনলাইনে জুয়া খেলেন বা বাজি ধরেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলেছে-অনলাইন তোকদার নিউজ এর বিশেষ প্রতিনিধি।নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান,দেশে এই মুহূর্তে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন জুয়ার সাইট ওয়ানএক্সবেট(1xbet)।এছাড়া বেটউইনার, বেট৩৬৫,মেলবেট,প্যারিম্যাচ সাইটও বেশ জনপ্রিয়।এগুলোর বিজ্ঞাপন নিয়মিত দেওয়া হয় ফেসবুকে।দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত এ সাইটগুলোতে ফুটবল,ক্রিকেটসহ বিভিন্ন খেলা নিয়ে বাজি ধরা যায়।ক্রিকেটে প্রতি বলে বলে,ম্যাচের প্রথম ওভারের প্রথম বলে,প্রতি ওভারে,প্রতি ম্যাচের প্রথম ছয় ওভার,পরবর্তী ওভারে উইকেট যাবে কি না ও কোন দল জিতবে এমন করে জুয়ার ক্যাটাগরি সাজানো।অনলাইনে নিয়মিত জুয়া খেলেন এমন একজন জাগো নিউজকে বলেন,এসব সাইট মূলত রাশিয়াকেন্দ্রিক।তবে ভারত ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকেও এগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়।কিছু দেশি সাইটও রয়েছে।
নিয়মিত অনলাইনে জুয়া খেলতেন হাফিজুল হক(ছদ্মনাম)-তিনি অনলাইন তোকদার নিউজ পোটালকে বলেন,ওয়ানএক্সবেটে জুয়া খেলতাম।প্রথমে নগদের মাধ্যমে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে সাইটে খেলা শুরু করি।এক রাতে পাঁচ হাজার টাকা থেকে এক লাখ টাকা লাভ হয়।পরদিন ৪০থেকে ৫০হাজার টাকায় খেলতে গেলে পুরো টাকা হেরে যাই।পরবর্তীসময়ে দুই লাখের মতো ইনভেস্ট করি।সেখানে খেলতে গিয়েও হেরে যাই।
বড় অংকের টাকা হেরে গিয়ে পরে পাঁচ থেকে ১০হাজার টাকার মধ্যে খেলা শুরু করি।সেখানে অনেক সময় দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত লাভ হয়,আবার অনেক সময় পুরো টাকাই হেরে যাই।এটি নেশার মতো।খেলতে শুরু করলে যতক্ষণ টাকা থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত খেলতে ইচ্ছা করে।টাকা শেষ হলে আবারও টাকা ইনভেস্ট করে খেলা শুরু করতে ইচ্ছা হয়।
হাফিজুল হক বলেন,এগুলোর অ্যাপ গুগল প্লে-স্টোরে পাওয়া যায় না।কারণ বিটিআরসি জুয়ার অ্যাপসগুলো বন্ধ করে রেখেছে।গুগল থেকে সার্চ করে বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপস ডাউনলোডের লিংক পাওয়া যায়।ইনস্টল করার পর অ্যাকাউন্ট খুলতে হয়।অ্যাকাউন্ট খোলা খুবই সহজ।শুধু নাম,মোবাইল নম্বর অথবা ইমেইল আইডি দিলেই অ্যাকাউন্ট খোলা সম্ভব।জুয়া খেলার আগে অ্যাপে টাকা দিতে হয় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে।অ্যাপে বিভিন্ন খেলায় জয়-পরাজয় নিয়ে বাজি ধরা যায়।এছাড়া বিভিন্ন গেমস থাকে,তবে সেটা কম মানুষ খেলে।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন,১সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ-নিউজল্যান্ডের ক্রিকেট খেলা ছিল।অ্যাপে বাংলাদেশ উইন ওয়ান ও নিউজিল্যান্ড উইন টু অপশন থাকে।বাজিতে অংশ নিতে অ্যাকাউন্টে এক হাজার টাকা জমা রাখতে হয়।খেলায় বাংলাদেশের রেটিং ছিল১.৪৪।অর্থাৎ,বাংলাদেশের হয়ে খেললে এক হাজার টাকায় ৪৪০টাকা পাওয়া যাবে।জমা রাখা এক হাজার টাকা বাদ দিয়ে পাওয়া যায় ৪৪০টাকা।অন্যদিকে নিউজল্যান্ডের রেটিং ছিল২.৪৭।অর্থাৎ নিউজিল্যান্ড জিতলে দলটির পক্ষে বাজি ধরা ব্যক্তি পাবেন ২হাজার ৪৭০টাকা।জমা রাখা এক হাজার টাকা বাদ দিয়ে হাতে আসবে এক হাজার ৪৭০টাকা।
আটক হচ্ছেন জুয়াড়িরা,থামছে না খেলা :-গত ১০মে কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকা থেকে আটক হন দুই অনলাইন বাজিকর।আটক এনামুল হক কয়েকজনের সহযোগিতায় বাজির টাকা ডলার,ভারতীয় রুপি কিংবা ডলার থেকে টাকায় রূপান্তরিত করতেন।আটক শাহরুখ হোয়াটসঅ্যাপে জুয়ার বিষয়ে চ্যাটিংসহ নিজ বিকাশ নম্বরে টাকার লেনদেন করতেন।তাদের কাছ থেকে জব্দ করা দুটি মোবাইল ফোনে একটি অনলাইন জুয়া সাইটে তার নিজ নামে অ্যাকাউন্টে আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।তার অ্যাকাউন্টে ১হাজার ৮৮০ইউএস ডলার পাওয়া যায়,যা বাংলাদেশি টাকায় ১লাখ ৬১ হাজার ৬৮০টাকা।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন,এসব অনলাইন ক্যাসিনো দেশের বাইরে থেকে পরিচালিত হলেও সমন্বয়ের জন্য দেশীয় সিন্ডিকেট রয়েছে।যারা এজেন্ট হিসেবে কাজ করে।তাদের মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে ফেসবুক গ্রুপ বা পেজ খুলে প্রচার চালানো হচ্ছে।
ভারত,রাশিয়া ও মালয়েশিয়া থেকে অনলাইনে পরিচালিত জুয়ার আসরে যুক্ত ছিল বাংলাদেশের একটি চক্র।এ চক্রের মাধ্যমে দেশে বসে ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া খেলছেন অনেকেই।গত ১৯ফেব্রুয়ারি রাতে ঢাকায় চক্রটির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের(ডিএমপি)গোয়েন্দা বিভাগ(ডিবি)।ডিবি বলেছে,চক্রের সদস্যরা গ্রাহক জোগাড় করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে জুয়ার আসরের অবৈধ অর্থের লেনদেন করেন।
গ্রেফতারদের আয়ের প্রকাশ্য কোনো উৎস নেই।অথচ প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়,তাদের ব্যাংক হিসাব ও মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে ১৫থেকে ২০কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে।গত বছর অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে পাওয়া ২০থেকে ৩০কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন তারা।
২০২১সালের ১০মে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভার্চুয়াল কারেন্সি ব্যবহার করে ক্যাসিনো প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে অনলাইন জুয়া ব্যবসা পরিচালনার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট(সিটিটিসি)।
সিটিটিসি জানায়,সংঘবদ্ধ দেশি-বিদেশি প্রতারকচক্র বিভিন্ন ভার্চুয়াল কারেন্সি এবং পেমেন্ট গেটওয়ে ব্যবহার করে অনলাইন জুয়া পরিচালনা করে।গ্রেফতাররা প্রত্যেকেই বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত ছাত্র।তারা পেমেন্ট গেটওয়ে Melbet ও Linebet-এর সরাসরি এজেন্ট।
চলতি বছরের ১৯ফেব্রুয়ারি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে অনলাইনে জুয়া পরিচালনাকারী বাংলাদেশের দুই মাস্টার এজেন্টসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে ডিবি-সাইবারের ওয়েব বেজড ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম ও অর্গানাইজ ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।
গ্রেফতাররা দীর্ঘদিন ধরে তাদের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়া(বেটিং)খেলার সাইট থেকে অর্জিত অর্থ দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে জমি ও সম্পদ বানিয়েছে।তারা মূলত মোবাইল ব্যাংকিং ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অবৈধ অর্থের লেনদেন(ই-ট্রানজেকশন)করতো।www.mazapbu.com ও www.betbuzz365 live ঠিকানার দুটি বেটিং ওয়েবসাইটের বাংলাদেশের মাস্টার এজেন্ট।
এক জেলায়ই দিনে ৩-৫কোটি টাকা লেনদেন :-অনলাইন জুয়ার নামে দেশের একটি জেলায়ই দিনে অন্তত তিন থেকে পাঁচ কোটি টাকা মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অবৈধভাবে লেনদেনের তথ্য পায় অপরাধ তদন্ত বিভাগ(সিআইডি)।টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ,আইপিএল,বিগব্যাশ,ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচগুলোতে চলে অনলাইনে জুয়ার আসর।জুয়া খেলার জন্য একজন জুয়াড়ি মোবাইল নম্বর বা ইমেইলের মাধ্যমে বেটিং সাইট বা অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খোলেন।ওই অ্যাকাউন্টের বিপরীতে একটি ই-ওয়ালেট তৈরি করে ব্যালেন্স যোগ করা হয়।জুয়ার নামে এভাবে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার লেনদেন হতো।এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত বছরের ১৩নভেম্বর অভিযান চালিয়ে অনলাইন বেটিং প্ল্যাটফর্ম ওয়ানএক্সবেট(1xbetbd.com)পরিচালনাকারী চক্রের নয় সদস্যকে গ্রেফতার করে সিআইডি।
গ্রেফতারের পর সিআইডির পক্ষ থেকে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৫০জন মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের তথ্য পাওয়া গেছে,যে নম্বরগুলো থেকে অনলাইন জুয়ার টাকা লেনদেন হচ্ছে।এই নম্বরগুলোর মধ্যে অন্তত ১৫টিতে দিনে ১০লাখের ওপর টাকা লেনদেন করছে জুয়াড়ি চক্র।পরে এই টাকা হুন্ডি বা অবৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে পাচার হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানান,জুয়ার লেনদেনের কাজে ব্যবহৃত সবগুলো এজেন্ট সিমই সেখানকার মোবাইল ব্যাংকিংয়ের এসআরের মাধ্যমে সম্পন্ন হতো।অনেক সময় জুয়ার এজেন্ট ও এসআরদের মধ্যে বিটুবির মাধ্যমে লেনদেন হলেও তাদের মধ্যে সরাসরি কোনো লেনদেন হতো না।
সিআইডি জানায়,শুধু গ্রেফতার স্বপনের সিম থেকে প্রতিদিন গড়ে সাত থেকে আট লাখ টাকা,লিপুর সিম থেকে প্রতিদিন গড়ে ১০লাখ টাকা ও নবাবের সিম থেকে প্রতিদিন পাঁচ থেকে ছয় লাখ টাকা লেনদেন হতো।
সাকিবের চুক্তির পর বেটউইনারে জুয়াড়ি বেড়েছে ১০ গুণ :-বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান বেটউইনার নিউজে শুভেচ্ছাদূত হিসেবে যোগ দেন।এর পরপরই বাংলাদেশে বেটউইনারডটকমে জুয়াড়ির সংখ্যা বেড়ে যায় প্রায় ১০গুণ।জুয়ার সাইট বেটউইনার পরিচালনাকারী তিন বাংলাদেশি এজেন্টকে গ্রেফতারের পর এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ(সিআইডি)।সিআইডি জানায়,এই জুয়া দেশের গ্রাম অঞ্চলে অল্পশিক্ষিত থেকে শুরু করে অর্ধশিক্ষিত মানুষ খেলছেন।গত চার মাসে চক্রটি দেশ থেকে চার কোটি টাকা পাচার করেছে।সিআইডি জানায়,বেটউইনার মূলত অ্যাপসভিত্তিক একটি অনলাইন বেটিং(জুয়া)সাইট।রাশিয়া থেকে এটি পরিচালিত হয়।স্পোর্টস,বেটিং ও ক্যাসিনোর জন্য এটি বিখ্যাত।বাংলাদেশের জুয়াড়িদের অন্যতম জনপ্রিয় ওয়েবসাইট এটি।
সাইটটি বাংলাদেশে এজেন্ট নিয়োগ করে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে অনলাইন গ্যাম্বলারদের(জুয়াড়ি)সঙ্গে জুয়ার টাকা লেনদেন করে।পরে এসব টাকা ক্রিপ্টোকারেন্সিতে(বিন্যান্স মাধ্যম) রূপান্তর করে রাশিয়ায় পাচার করে।
যা বলছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী :-র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জাগো নিউজকে বলেন,সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে একাধিক চক্র বিভিন্ন সিক্রেট গ্রুপে জুয়ায় আসক্তদের যুক্ত করে।তাছাড়া জুয়া পরিচালনাকারীরা বেকার যুবকদের অল্প সময়ে টাকা কামানোর লোভ দেখিয়ে তাদের সর্বস্ব লুটে নেয়।অবৈধভাবে ই-ট্রানজেকশনের মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচারও করে জুয়া পরিচালনাকারীরা।বিশেষ করে আইপিএল,বিপিএল ও বিশ্বকাপের সময় এসব লেনদেন বেড়ে যায়।বেশিরভাগ জুয়া হয় ক্রিকেট ও ফুটবল নিয়ে।মানি লন্ডারিং নিয়ে সিআইডি কাজ করলেও অনলাইন জুয়াড়ি চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব নিয়মিত মনিটরিং ও অভিযান পরিচালনা করছে।
কমান্ডার মঈন বলেন,বেটিং অ্যাপে জুয়ার ফাঁদ যে শুধু শহরকেন্দ্রিক তা নয়।শহর ছাপিয়ে তা এখন দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে।অতি লোভে পড়ে জুয়ার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্ব হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ।তবে এর আগে র্যাব অনেক জুয়াড়িকে আইনের আওতায় এনেছে।পাশাপাশি অনলাইনে জুয়া পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ডিএমপির গোয়েন্দা ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশনের সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার(ডিসি)মোহাম্মদ তারেক বিন রশিদ জাগো নিউজকে বলেন,অনলাইন জুয়া একটা নেশার মতো,এখানে একবার ঢুকলে নিঃস্ব হওয়া ছাড়া উপায় নেই।অংশগ্রহণকারীরা নিঃস্ব হওয়ায় পারিবারিক সহিংসতা বাড়ছে,আইনশৃঙ্খলার ওপর প্রভাব পড়ছে।আমাদের পুলিশের মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে।সবাইকে সামাজিকভাবে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।
সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড রিস্ক ম্যানেজমেন্ট ইউনিটের বিশেষ পুলিশ সুপার মোঃ রেজাউল মাসুদ-অনলাইন তোকদার নিউজেক বলেন,যেসব জুয়ার সাইট রয়েছে তাদের মধ্যে পাঁচটি সাইট নিয়ে আমরা দেশের একাধিক জায়গায় অভিযান পরিচালনা করেছি।অভিযানে শুধু একটি মামলায়ই ৩০-৩৫লাখ টাকা ও গাড়ি উদ্ধার করা হয়।অনলাইন জুয়া মহামারির মতো ছড়িয়ে পড়ছে।বর্তমানে গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে এই অনলাইন জুয়া।মোবাইল ও টেকনোলজির সহজলভ্যতায় মানুষ খুব সহজেই জুয়ার সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে।এর পেছনে দুটি চক্র জড়িত।একটি জুয়ার এজেন্ট অন্যটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের এজেন্ট।এজেন্ট ছাড়া কেউ জুয়া খেলতে পারে না। অর্থাৎ,টাকা লেনদেন সম্ভব নয়।টাকা লেনদেনের ক্ষেত্রে যদি মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট নম্বর ব্যবহার না হয় তাহলে অনেকাংশে অনলাইন জুয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন,সীমান্তবর্তী জেলা ছাড়াও মেহেরপুর,ফরিদপুর,মাদারীপুর ও উত্তরবঙ্গের কিছু জেলা থেকে সবচেয়ে বেশি অনলাইন জুয়া পরিচালনা করা হয়।সম্প্রতি একটি জুয়ার সাইট পর্যালোচনা করে দেখা যায়,একসঙ্গে প্রায় এক লাখ বাংলাদেশি জুয়া খেলছে।এর মধ্যে একজন জুয়া খেলে প্রায় এক লাখ ৬৭হাজার টাকা খুইয়েছেন।এক লাখের মধ্যে যদি ১০শতাংশ মানুষের ১০হাজার টাকা করে খোয়া যায় তাহলে কী পরিমাণ টাকা চলে যাচ্ছে তা উদ্বেগের বিষয়।প্রতিদিন প্রায় ৩শ’র বেশি সাইটে অনলাইন জুয়া খেলা হয়।এর মধ্যে বেশকিছু সাইট বিটিআরসি বন্ধ করেছে।
যা বলছে বিটিআরসি :-এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি)চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার-অনলাইন তোকদার নিউজেক বলেন,টাকা-পয়সার লেনদেনের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিকাশ বলতে পারবে।সোশ্যাল মিডিয়ায় জুয়া খেলার বিজ্ঞাপন ও জুয়া খেলার ওয়েবসাইট দিয়ে বিজ্ঞাপনের বিষয়ে বিটিআরসি ফেসবুককে নোটিশ করেছে।সম্প্রতি ফেসবুক টিমের সঙ্গে বিটিআরসির বৈঠক হয়।সেখানেও বলা হয়েছে এ ধরনের কার্যক্রম বাংলাদেশ অ্যালাও করবে না।
২০১৯সালে ১৭৬টি জুয়ার সাইট বন্ধ করেছিল বিটিআরসি।তবুও বর্তমানে বিভিন্ন পন্থায় বিভিন্ন সাইটে জুয়া খেলা হচ্ছে।এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিটিআরসির চেয়ারম্যান বলেন,কেউ যদি হুট করে একটি জুয়ার সাইট খোলে,সার্বক্ষণিকভাবে হয়তো আমাদের নজরে আসে না।আমাদের নজরে যেগুলো আসছে সেগুলো বন্ধ করে দিচ্ছি।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরে এলে তারাও বিটিআরসিকে বলে এবং আমরা সেই সাইটগুলো বন্ধ করে দেই।জুয়ার সাইট বন্ধ করা আমাদের চলমান প্রক্রিয়া।
মোবাইল ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান যা বলছে :-বিকাশের সঙ্গে কোনো জুয়ার সাইটে চুক্তি আছে কি না জানতে চাইলে বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম-অনলাইন তোকদার নিউজকে বলেন,বিকাশের সঙ্গে কখনোই,কোনো সময় জুয়ার সাইটে চুক্তির সুযোগ নেই।বিকাশ শুধু বাংলাদেশে পরিচালিত হয়।বাংলাদেশের বাইরে এর ব্যবহার সম্ভব নয়।অপরাধীরা সোশ্যাল মিডিয়ার কিছু কিছু জায়গায় বিকাশের নম্বর ব্যবহার করার চেষ্টা করে ও দেখানোর চেষ্টা করে।যাতে মানুষ মনে করে এখান থেকে ব্যবসা করার সুযোগ আছে।আমরা এসব অপরাধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেই।এছাড়া অভিযোগ ছাড়াও নিজেদের মনিটরিং ব্যবস্থা রয়েছে,তা দিয়েও আমরা তাদের ধরতে পারি।নিয়মিতভাবে এদের বিষয়ে তথ্য পাচ্ছি,মনিটরিং করা হচ্ছে।এটি আমাদের চলমান প্রক্রিয়া।
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম একটি বিশাল জায়গা।যারা অবৈধ লেনদেনের ক্ষেত্রে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের চেষ্টা করেন তাদের ধরার জন্য ২৪ঘণ্টা বিকাশের টিম কাজ করে।নিজেদের প্রযুক্তির মাধ্যম ছাড়াও অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের ধরে নম্বরগুলো ব্লক করা হয়।একইসঙ্গে এমএসএফের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাই।আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন তাদের(অপরাধীদের)সম্পর্কে জানতে চায় তাদেরও তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।জুয়া খেলার সাইটগুলোতে ব্যক্তিগত মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টের বদলে এজেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যবহৃত হচ্ছে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিকাশের এই কর্মকর্তা বলেন,বিকাশ যে মনিটরিং করে তা সবার জন্যই।অর্থাৎ,ব্যক্তিগত ও এজেন্ট নম্বরগুলো মনিটরিং করা হচ্ছে।সাস্পিসাস অ্যাক্টিভিটি রিপোর্ট(এসএআর)প্রতিদিন জেনারেট করা হয়।বিকাশের কোনো অ্যাকাউন্টে যদি সন্দেহজনক লেনদেন হয় তখন থেকেই মনিটরিং করা হয় এবং এসএআর রিপোর্ট বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটকে(বিএসআইইউ)জানানো হয়।এছাড়া আরও একটি রিপোর্ট করা হয়,সাস্পিসাস ট্রানজেকশন রিপোর্ট বা সন্দেহজনক ট্রানজেকশনের তথ্য।বিএসআইইউতে জানানো ছাড়াও এসব ব্যক্তিগত/এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।এই রিপোর্টগুলো করা হয় আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সে।
বিকাশের লেনদেনে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় বলেও জানান বিকাশের হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম।
নগদের হেড অব কমিউনিকেশন মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম সজল-অনলাইন তোকদার নিউজকে বলেন,নগদের সব ধরনের গ্রাহককে সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হয়।কেউ ট্রানজেকশন করলে বুঝতে পারি না সেই ট্রানজেকশনটা কীসের জন্য হচ্ছে।আমরা শুধু টাকার অংকটা দেখতে পারি।ট্রানজেকশনের টাকা হুন্ডি,বন্ধুকে পাঠানো হচ্ছে না জুয়ার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে তা বোঝার উপায় নেই।আমরা মনিটরিংয়ে দেখি এসব সাইটে(জুয়া)যেসব মোবাইল নম্বর দেওয়া থাকে বেশিরভাগ ব্যক্তিগত(পারসোনাল)নম্বর।অর্থাৎ সেসব নম্বরে সেন্ড মানি করা যাবে ক্যাশ আউট নয়।পেমেন্ট যখন হয় তখন নম্বরটি মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট আর এজেন্ট হলে ক্যাশ আউট।আমরা মনিটরিংয়ে বিভিন্ন সময় দেখি নগদের লোগো কিংবা নম্বর ব্যবহার হচ্ছে।এসব নম্বর চেক করে দেখা হয় নম্বরটি ব্যক্তিগত,মার্চেন্ট নাকি এজেন্ট।মনিটরিংয়ে এ পর্যন্ত মার্চেন্ট এবং এজেন্ট একটিও পাইনি।কারণ এমন নম্বর পেলে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা লাগবে না,আমরা নিজেরাই বন্ধ করে দেবো।
তবে নম্বরটি পারসোনাল অ্যাকাউন্ট হলে সরাসরি আমরা বন্ধ করতে পারি না,তখন বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটকে ইনফর্ম করতে হয়।তারা যদি বন্ধ করতে বলেন তখন আমরা বন্ধ করতে পারি।তবে অবৈধ ও সন্দেহজনক যে কোনো লেনদেন আমরা সার্বক্ষণিক মনিটরিং করি।
অনেক সময় গভীর রাতে একটি নম্বর থেকে একাধিক নম্বরে লেনদেন হলে তা সন্দেহজনক তালিকায় রাখা হয়।প্যারামিটার অনুযায়ী প্রযুক্তি আমাদের রেড অ্যালার্ট দেয়।সাধারণত এক মিনিটে পারসোনাল অ্যাকাউন্ট থেকে তিন থেকে চারটি নম্বরে ট্রানজেকশন করা হয় না।যখন কেউ এ ধরনের লেনদেন করে তখন হলুদ সিগন্যাল কিংবা বেশি ট্রানজেকশন করলে রেড সিগন্যাল চলে আসবে।এ ধরনের মনিটরিং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিদিন ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটকে অবহিত করা হয়। বিএসআইইউ কিংবা সিআইডি ইনফরমেশন চাইলে তাৎক্ষণিকভাবে তথ্য সরবরাহ করা হয় এবং এটি আইন দ্বারা আমরা বাধ্য।তথ্য চাইলে আমরা তা দিতে বাধ্য।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বক্তব্য :-বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মোঃসিরাজুল ইসলাম-অনলাইন তোকদার নিউজকে বলেন,মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ব্যবহার করে অনলাইনে জুয়ার টাকা লেনদেন উদ্বেগজনক।বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ ধরনের জুয়ার কোনো লেনদেনের নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।জুয়া কোনোভাবেই ব্যাংকি চ্যানেলের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নয়।
সিআইডি দাবি করছে,প্রতিদিন ৩০০সাইটে বাংলাদেশিরা অনলাইনে জুয়া খেলছে।বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেবে কি না জানতে চাইলে-বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন,এ বিষয়ে নিশ্চয়ই সিআইডি অ্যাকশন নেবে।
দয়া করে এই পোস্টটি আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন,সকল সংবাদ পেতে পেজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন…
এই বিভাগের আরও খবর
★প্রকাশক:- মোঃ মোশারফ হোসেন তোকদার।
★ব্যবস্থাপনা পরিচালক:- মোঃ এম,খোরশেদ আলম,সভাপতি প্রেসক্লাব পীরগাছা,রংপুর বিভাগ।
© All rights Reserved © 2020 গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত এই ওয়েবসাইটি Tokdernews.com বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পোর্টাল।