রাজশাহীতে জেলা পরিষদ নির্বাচনে লড়াই হবে ইকবাল-আকতারের

রাজশাহীতে জেলা পরিষদ নির্বাচনে লড়াই হবে ইকবাল-আকতারের
News
অনলাইন ডেস্ক :-


রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে এবারও আওয়ামী লীগের টেনশনের কারণ বিদ্রোহী’ প্রার্থী।২০১৬সালের ২৮ডিসেম্বরের নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীকে পরাজিত করে চেয়ারম্যান হন বিদ্রোহী প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার।এবার মোহাম্মদ আলী সরকার ভোটে অংশ না নিলেও আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী শক্ত অবস্থানে আছেন।সোমবারের এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সঙ্গে বিদ্রোহী’ প্রার্থীর দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।গতবারের নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ অনেকটা প্রকাশ্যেই বিদ্রোহী’ প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন।এ নিয়ে ব্যাপক সমালোচিত হন তিনি।পরের জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলে তিনি গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদ পাননি।তাই এবার বিদ্রোহী প্রার্থীর জন্য সরাসরি কোনো নেতাকর্মী মাঠে না নামলেও ভেতরে ভেতরে কাজ করেছেন।এবার জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের সমর্থন পেয়েছেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল।আর বিদ্রোহী’ হয়েছেন আখতারুজ্জামান আকতার।তিনি জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন।দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় তাকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কারের কথা জানানো হয়েছে।এবার তার পক্ষে দলীয় নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে মাঠে নামতে দেখা যায়নি।তবে অনেকে ভেতরে ভেতরে তার জন্য কাজ করেছেন।কারণ,রাজশাহীর রাজনীতিতে এবারও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা পরিষদ নির্বাচন।এ কারণে আকতার অনেকেরই সমর্থন পেয়েছেন।ফলে তিনি দলীয় প্রার্থীর টেনশনের কারণ হয়ে উঠেছেন।তবে জেলা পরিষদের কে চেয়ারম্যান হচ্ছেন তা সোমবার ভোট গ্রহণ শেষে জানা যাবে।আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আখতারুজ্জামান আকতারের প্রতীক মোটরসাইকেল।আর দলের প্রার্থী মীর ইকবাল লড়ছেন কাপ-পিরিচ প্রতীক নিয়ে।তারা ছাড়াও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে আরও দুজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।তারা হলেন-তালগাছ প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ার ইকবাল বাদল ও আনারস প্রতীকের আফজাল হোসেন।যদিও প্রচার-প্রচারণা শুরুর পর থেকে এ দুজনকে নিয়ে আলোচনা নেই।মূল আলোচনা মীর ইকবাল ও আখতারুজ্জামান আকতারকে নিয়ে।দুজনে গরম করেছেন নির্বাচনের মাঠ।শেষ দিকে নির্বাচনী এলাকায় কাড়ি কাড়ি টাকাও উড়েছে বলে জানা গেছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে,রাজশাহী জেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা ১হাজার ১৮৫জন।এক প্রার্থীর হিসাবে,ভোটারদের মধ্যে বিএনপি মতাদর্শের ভোটার প্রায় ৩৮৬জন।ভোটের ফলাফলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এই ৩৮৬ভোট।ভোটের সাধারণ প্রচারণার বাইরে প্রার্থীরা আলাদাভাবে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন এসব ভোটারদের।চেয়েছেন নিজের পক্ষে সমর্থন।দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,চেয়ারম্যান প্রার্থী মীর ইকবালের পক্ষে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বড় অংশের নেতাকর্মী কাজ করেছেন।তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা বলে তার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধারাও মাঠে নেমেছিলেন।তবে গোপনে আকতারের পাশে ছিলেন রাজশাহীর প্রভাবশালী দুই আওয়ামী লীগ নেতা।এ ছাড়া ভোটে প্রভাব ফেলতে পারেন এমন কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিও তার পাশে ছিলেন।ফলে এবারও ভোটে বিদ্রোহী প্রার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর কাছে টেনশনের কারণ।বিষয়টি নিয়ে অবশ্য কোনো মন্তব্য করতে চাননি আওয়ামী লীগের প্রার্থী মীর ইকবাল।নির্বাচন কেমন হবে জানতে চাইলে রোববার(১৬অক্টোবর)দুপুরে মীর ইকবাল বলেন,আমি আগাম কোনো কথা বলি না।যেভাবে ভোটারের সমর্থন চাইতে হয়,সেভাবেই চেয়েছি।কাল ভোট হবে,ফলাফল হলেই জানতে পারবেন।স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী আখতারুজ্জামান আকতার বলেন,ভোটের প্রচারে নেমে আমি ৯৫শতাংশ ভোটারের সঙ্গে সশরীরে দেখা করেছি।তারা আমাকে সমর্থন দিতে চেয়েছেন।আশা করি তারা সে কথা রাখবেন।তিনি বলেন,আমি শান্তিপূর্ণ ভোট চাই।ভোটাররা যেন উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে ভোট দিতে পারেন।আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও যেন উৎসবমুখর ভোটের পরিবেশ বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকেন,সেটাই চাই।রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবুল হোসেন জানান,সোমবার(১৭অক্টোবর)সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত রাজশাহীর ৯টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ করা হবে।জেলার প্রতিটি উপজেলা পরিষদে করা হয়েছে ভোটকেন্দ্র।চারজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ছাড়াও নয়টি সাধারণ ওয়ার্ডের জন্য ৩১জন এবং তিনটি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য ১৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।তিনি আরও জানান,প্রত্যেকে কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ হবে ইভিএমে।প্রতিটি কেন্দ্রে নির্বাচনী সামগ্রী পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।প্রতিটি ভোট কেন্দ্রে থাকবে ক্লোজ সার্কিট(সিসি)ক্যামেরা।

ঢাকা থেকে নির্বাচন কমিশন এবং রিটার্নিং কর্মকর্তা সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবেন