যশোরের মনিরামপুরের খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে(ইউপি)জন্ম সনদ নিতে বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে সেবা গ্রহীতাদের।ইউপি সচিব আব্দুল আলিম নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সনদ প্রতি সরকারি খরচের ৩গুণ টাকা নিচ্ছেন।পরিষদে যোগদানের পর থেকে ৬মাস ধরে তিনি এভাবে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে বাড়তি টাকা আদায় করছেন বলে অভিযোগ।জন্ম সনদে সরকারি খরচ দুই বছরের নীচের শিশুদের জন্য ২৫টাকা ও তার ওপরের বয়সীদের জন্য ৫০টাকা নির্ধারণ করা হলেও সচিব প্রতি সনদে ১২০থেকে ১৫০টাকা করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ।এছাড়াও জন্ম সনদের ত্রুটি সংশোধনের জন্য সরকারি খরচ ১০০টাকার পরিবর্তে সচিব আব্দুল আলিম ২৫০থেকে ৩০০টাকা নিচ্ছেন।খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে সরেজমিনে গিয়ে সচিবের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।যারা পরিষদের বাইরে থেকে জন্ম সনদের আবেদন করে জমা দিচ্ছেন তাঁদের কাছ থেকেও নির্ধারিত ফি’র ৩গুণ টাকা নিচ্ছেন সচিব।মামুদকাটি গ্রামের কলেজছাত্র আব্দুর রহমান বলেন,আমার, বাবা ও মার তিন জনের জন্ম সনদের জন্য বাইরে থেকে আবেদন করে খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিয়েছি।সচিব আমার জন্ম সনদের জন্য ১৫০টাকা,বাবার জন্ম সনদের জন্য ১৩০টাকা ও মার জন্ম সনদের জন্য ১২০টাকা নিয়েছেন।একই গ্রামের ভ্যানচালক রবিউল ইসলাম বলেন,আমার ২বছরের কম বয়সী মেয়ে তাকিয়ার সনদ বের করার জন্য বাইরে থেকে আবেদন করে পরিষদে জমা দিয়েছি।সচিব ১৫০টাকা চেয়েছে।অনুরোধের পর ২০টাকা কম নিয়েছে।অভিযোগ রয়েছে,সচিব আব্দুল আলিমের কথা মতো কাজ না করলে সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন।টাকা কম দিতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ফাইল ছুড়ে ফেলেন।আবেদন জমা দেওয়ার সময় টাকা কম দিলে সচিব খাতায় লিখে রাখেন।পরে সনদ আনতে গেলে সেই টাকা নেন তিনি।এছাড়া টাকাসহ আবেদন জমা দেওয়ার পর ফাইল হারানোর কথা বলে দ্বিতীয়বার টাকা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।কাশিপুর গ্রামের সুমাইয়া খাতুন বলেন,আমার স্বামী মোবাইদুল হোসেনের জন্ম সনদের জন্য ৫মাস আগে কাগজপত্রসহ সচিবের কথা মতো টাকা দিয়েছি। কয়েকদিন পরে সনদ আনতে গেলে সচিব বলেছে,ফাইল পাওয়া যাচ্ছে না।পরে আবার নতুন করে কাগজপত্র ও টাকা দিয়ে সনদ করতে হয়েছে।জন্ম সনদে বাড়তি টাকা নেওয়ার বিষয়ে খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা আনোয়ার হোসেন বলেন,দুমাস আগে পরিষদে সভা করে জন্ম সনদের নতুন আবেদনের জন্য ১৫০টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।পরিষদের সচিব আব্দুল আলিম বলেন,বাইরে থেকে আবেদন করে আনলেও সনদ বের করতে উদ্যোক্তাদের ৫০টাকা করে দিতে হয়।এছাড়া কাগজ কালির দাম বেড়েছে।এ জন্য বেশি টাকা নেওয়া হয়।খেদাপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জিন্নাহ বলেন,জন্ম সনদের নতুন আবেদনে ১০০টাকা নেওয়ার কথা।সচিব কত টাকা নিচ্ছেন বলতে পারব না।আলোচনা করে ঠিক করে দেব।যশোরের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ হুসাইন শওকত বলেন,বাইরে থেকে আবেদন করলে জন্ম সনদের সরকারি ফি থেকে বেশি টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই।খেদাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হবে।