গুজব যাতে না ছড়ায় :-
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে ডিসি-এসপিদের নিয়ে আয়োজিত বৈঠকে এমন নির্দেশনা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো:আহসান হাবিব খান।
তিনি বলেন,নির্বাচনের আগে-পরে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের পক্ষ বা বিভিন্ন মহল থেকে নানা ধরনের গুজব বা অপপ্রচার ছড়ায় এবং অনেক মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করে।আপনারা এ বিষয়ে সতর্ক থাকবেন।কোনও গুজবের সন্ধান পেলে বা এরকম পরিস্থিতি তৈরি হলে আপনারা দ্রুত গুজবকারীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।আপনারা জেলা উপজেলা পর্যায়ে সার্বিকভাবে খোঁজ-খবরের পাশাপাশি সোশাল মিডিয়ায় কোনও গুজব ছড়াচ্ছে কিনা সে বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করবেন।
সাংবাদিকরা বাধা পেলে ভুল বার্তা যাবে :-
তিনি বলেন,নির্বাচন কমিশনের দেওয়া নীতিমালা অনুসরণ করে খবর সংগ্রহের জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা সারা দেশব্যাপী কর্মরত থাকেন।তারা নির্বাচনি এলাকার ও বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রের সংবাদ সংগ্রহ করে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচার করেন।
তাদের কাজে যাতে বাধা সৃষ্টি না হয় সে ব্যাপারে নিশ্চিত করবেন।নির্বাচন হবে অবাধ,নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে।সেটাই গণমাধ্যমকর্মীরা তুলে ধরবে সারা দেশের মানুষের কাছে।মনে রাখতে হবে গণমাধ্যমকর্মীরা তাদের কাজে অযৌক্তিক বাধাপ্রাপ্ত হলে বিভিন্ন মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে ভুল বার্তা যাবে।বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করবেন।
এমপি-মন্ত্রীদের প্রভাব নিয়ন্ত্রণ :-
এই কমিশনার আরও বলেন,নির্বাচনের সময় অনেক প্রভাবশালী মহল বা রাজনৈতিক দলের নেতা,সাবেক/বর্তমান মন্ত্রী এমপিসহ নানা মানুষ এলাকায় প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে।তাদের মধ্যে কেউ কেউ নির্বাচনের সময় অনেকে পেশিশক্তি,অর্থশক্তি বা ক্ষমতা প্রদর্শনের চেষ্টা করে।কালো টাকার ব্যবহারে কথাও শোনা যায়।আপনারা চোখ কান খোলা রেখে এই বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ করবেন।
তিনি বলেন,আমাদের একমাত্র লক্ষ্য একটি অবাধ,সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন জাতিকে উপহার দেওয়া।যে কোনও মূল্যে আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন করতে চাই।আমরা কোনও বিতর্কিত নির্বাচন করে সমোলোচিত হতে চাই না।জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদেরকে বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই নির্বাচনকালীন সময় আপনারা আমাদের বিশ্বস্ত প্রতিনিধি হয়ে কাজ করেন।মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন সুষ্ঠু এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার দায়িত্ব আপনাদের ওপর।আপনাদের মনে রাখতে হবে আপনারা সবাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী।নির্বাচন কমিশনের প্রত্যাশা সবাই যেন তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব শতভাগ নিরপেক্ষ হয়ে পালন করে।
দলীয় মনোভাব পোষণ করা যাবে না :-
ডিসি-এসপিদের উদ্দেশ্যে এই কমিশনার বলেন,কখনও দলীয় মনোভাব পোষণ করা যাবে না বা রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা প্রভাবিত হওয়া যাবে না।দায়িত্ব পালনে প্রার্থী,রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কখনও অতি উৎসাহী হয়ে এমন কোনও আচরণ করবেন না যাতে আপনাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে এবং নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়।
দলীয় নেতাকর্মীদের হয়রানি নয় :-
তিনি বলেন,আরেকটি বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে যদি আগে থেকেই ফৌজদারি বা ক্রিমিনাল মামলা থাকে সেটি ভিন্নভাবে আদালতে স্বাভাবিক গতিতে চলবে।কিন্তু অযথা নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলার অভিযোগ পাওয়া যায়।এসব বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে স্বচ্ছ মনোভাব দেখাতে হবে।নির্বাচনে প্রার্থী বা নেতাকর্মীদের মধ্যে কোনও ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি না হয় সে বিষয়টা ও বিবেচনায় রাখতে হবে।আহসান হাবিব বলেন,কোনও প্রার্থীর বাড়িঘর-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ হলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্র জমা নেওয়ার বিষয়টিতে আপনারা অবশ্যই গুরুত্ব দেবেন।এখানে কোনও প্রকার ছাড় না দিয়ে আইনগতভাবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে হবে।বিগত সময়ে নির্বাচএনর আগে ও পরে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা দেখা গেছে।এ বিষয়ে অধিকতর সতর্ক থাকতে হবে।সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে।আমরা চাই না নির্বাচনকে কেন্দ্র ওই সব জায়গায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটুক।সে জন্য আপনারা পূর্বপ্রস্তুতি নেবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সব নির্বাচন কমিশনার,ইসি সচিব,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণাণয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব,সব জেলার এসপি ও ডিসিসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।