রান্না করতে ভালোবাসেন কিন্তু পেঁয়াজ কাটার নাম শুনলেই কান্না পায়?পেঁয়াজ কাটা মানেই নাকের জলে চোখের জলে একাকার,এর মূলে রয়েছে কিছু কারণ।প্রথমেইজানা যাক সেগুলি কী কী-
★পেঁয়াজে একাধিক উৎসেচক ও অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে যেগুলি পেঁয়াজ কাটার সময়ে বায়ুতে মিশে যায়।এই অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলির মধ্যে থাকে বেশ কিছু সালফার ঘটিত যৌগ।এই ধরনের যৌগ চোখে গেলে প্রদাহ সৃষ্টি হয়।প্রদাহের অনুভূতি নিয়ন্ত্রণ করতে অশ্রুগ্রন্থিগুলি সক্রিয় হয়।ফলে চোখে জল এসে যায়।অন্যান্য পেঁয়াজের থেকে মিষ্টি পেঁয়াজে এই ধরনের উৎসেচক কম থাকে,ফলে এই ধরনের পেঁয়াজ কাটার সময় কিছুটা কমে বিড়ম্বনা।
★পেঁয়াজেরএকটি রাসায়নিক যৌগ বা উপাদান হলো সালফোক্সাইড।পেঁয়াজ কাটলে কোষ উন্মুক্ত হয়ে পড়ে।ভেতরে থাকা এনজাইম বেরিয়ে সালফোক্সাইডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে।তার ফলে উৎপন্ন হয় সালফেনিক অ্যাসিড।এই অ্যাসিড একাধারে বেশ কিছু বিক্রিয়া ঘটায়।সব শেষে তৈরি হয়ে সিন-প্রোপেনেথিয়াল এস-অক্সাইড।খটমটে নামের এই যৌগ বা উপাদানটি বাতাসের চেয়েও হালকা।তৈরি হওয়া মাত্র উড়ে যায়।
★পেঁয়াজ কাটার সময় দেখবে আমাদের মাথা পেঁয়াজের ঠিক ওপরেই থাকে।ফলেসিন-প্রোপেনেথিয়াল এস-অক্সাইড উড়ে গিয়ে ঠাঁই নেয় চোখে।চোখের পানির সঙ্গে আবারও বিক্রিয়া হয়।তৈরি হয় সালফিউরিক অ্যাসিড চোখে সালফিউরিক অ্যাসিড যে বিপজ্জনক,আমাদের মস্তিষ্ক কিন্তু ঠিকই তা বুঝতে পারে।তাই মস্তিষ্ক চোখের গ্রন্থিগুলোকে সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ দেয়,যত দ্রুত পারো ঝেঁটিয়ে বিদায় করো!আর তারপরই চোখ থেকে পানি বেরিয়ে ধুয়ে ফেলে সালফিউরিক অ্যাসিড।প্রতিদিন রান্না করার সময়ে দু’-চারটে পেঁয়াজ কেটে ফেলা যায়।তবে বাড়িতে কোনও অনুষ্ঠান হলে বেশি পরিমাণে পেঁয়াজ কাটতে হতে পারে।তখনই সমস্যায় পড়তে হয়।কয়েকটি উপায়জানলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।আজ জেনে নিন এমন কিছু সহজ উপেয়যেগুলি মেনে চললে পেঁয়াজ কাটতে গেলে চোখের জল পড়বে না ===?
১:-পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে ১৫থেকে ২০মিনিট ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে রাখুন।এতে সালফেনিক অ্যাসিড ধুয়ে যাবে আর কাটার সময় চোখে জল আসবে না।তবে পেঁয়াজ এ ক্ষেত্রে অনেক পিচ্ছিল হয়ে যায়।তাই সাবধানে ছুরি ব্যবহার করা উচিত।
২:-পেঁয়াজ কাটার সময়ে যত ধারাল ছুরি ব্যবহার করবেন,ততই কম কাঁদতে হবে।অবাক লাগলেও এই পদ্ধতি কাজ করে।পেঁয়াজের কোষে কম ক্ষতি করে ধারাল ছুরি।তাই খুব বেশি এনজাইম বেরোয় না।
৩:-পেঁয়াজ কাটার সময়ে টেবিল ফ্যান চালিয়ে রাখতে পারেন।ফ্যানের হওয়া থাকলে বা বাতাস চলাচল করলে সালফারঘটিত গ্যাস সহজে বার হয়ে যায়।ফলে তা চোখের সংস্পর্শে আসে না।
৪:-পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে ঘণ্টা খানেক ডিপ ফ্রিজারে ভরে রাখুন।ফ্রিজ থেকে বার করে পেঁয়াজ কাটলে চোখে আর জল আসবে না।
৫:-ঠান্ডা করে রাখতে পারলে কিছুটা কমে পেঁয়াজের ঝাঁঝ,কারণ কম তাপমাত্রায় পেঁয়াজের অ্যামাইনো অ্যাসিডগুলির সক্রিয়তা কিছুটা কমে যায়।তাই কাটার ১৫মিনিট আগে পেঁয়াজ ফ্রিজে রেখে দিলে সমস্যা কিছুটা কমবে।
৬:-পেঁয়াজের গোড়ার অংশটি আগে কেটে বাদ দিয়ে দিন।এই অংশে সবচেয়ে বেশি পরিমাণ উৎসেচক সঞ্চিত থাকে।ফলে কাটার সময় এই অংশের কোষগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হলে উৎসেচকের ক্ষরণ বেশি হয়।
★প্রকাশক:- মোঃ মোশারফ হোসেন তোকদার।
★ব্যবস্থাপনা পরিচালক:- মোঃ এম,খোরশেদ আলম,সভাপতি প্রেসক্লাব পীরগাছা,রংপুর বিভাগ।
© All rights Reserved © 2020 গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত এই ওয়েবসাইটি Tokdernews.com বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পোর্টাল।