রংপুরের কাউনিয়ায় নিজ শয়ন ঘরে মেঝে খুড়ে জমিলা বেগম(৬০)নামে এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।এ ঘটনায় নিহত জামিরার ছেলে জামিল মিয়া ভেলনকে(২২)গ্রেফতার করেছে পুলিশ।বুধবার উপজেলার উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের সিট নাজিরদহ ময়নুদ্দিটারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।জমিলা বেগম সিট নাজিরদহ ময়নুদ্দিটারী গ্রামের লাল মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী।লাল মিয়া হারাগাছ পৌরসভার প্রথম স্ত্রীর সাথে বসবাস করে।বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় অভিযুক্ত জামিল মিয়া ভেলনকে পেনেল কোড ৩০২,২০১ধারায় হত্যা ও লাশ গুমের অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে রংপুর আদালতে সোপর্দ করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)মো:মোন্তাছের বিল্লাহ তিনি বলেন,বৃহস্পতিবার ভোরে নিহত জমিলা বেগমের ভাই ছামুছুল হক বাদী হয়ে জামিল মিয়া ভেলনকে আসামী করে হত্যা ও লাশ গুমের মামলা দায়ের করেন।পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়,হারাগাছ সিট নাজিরদহ এলাকার লাল মিয়ার দ্বিতীয় স্ত্রী জমিলা খাতুনের খোঁজ মিলছিলো না গত শনিবার ২০আগস্ট থেকে।নিকটত্বম আত্মীয়রা বুধবার বিকেলে বাড়ীতে তাকে খুঁজতে গিয়ে শোয়ার ঘরে মেঝে নতুন ভাবে নেপানো দেখতে পায়।সন্দেহ হলে গ্রামের আরও কয়েকজনকে নিয়ে মাটি খুঁড়ে সেখানে পচে যাওয়া লাশের অংশ ভেসে উঠে।এরপর আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী ছেলে জামিলকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।খবর পেয়ে রাতেই সেখানে উপস্থিত হয় সহকারি পুলিশ সুপার(সি-সার্কেল,থানা পুলিশ ও সিআইডির টিম।পুলিশ গভীর রাত পর্যন্ত ঘরের মেঝের মাটি খুড়ে আলামত সংগ্রহ শেষে জামিলার লাশ উদ্ধার করে।মামলার তদন্দকারী ও কাউনিয়া থানার উপপরিদর্শক(এস,আই)বুলবুল আহমেদ মামলার বরাত দিয়ে জানান,প্রায় পাঁচ মাস আগে জামিল মিয়া ভেলনের বিয়ে হয় পাশের গ্রামের এক মেয়ের সাথে।কিন্তু দুই মাস ধরে তার স্ত্রী পিতার বাড়ীতে অবস্থান করছে।এনিয়ে প্রায় জামিল তার মায়ের সাথে ঝগড়াবিবাদে জড়িয়ে পড়তো।এরপর সে তার মাকে হত্যার পরিকল্পনা করে।স্ত্রী চলে যাওয়ার পর থেকে জামিল এবং তার মা এক ঘরে থাকেন।পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে জামিল তার মায়ের গলা চেপে ধরে হত্যার পর ঘরের মেঝে খুড়ে মায়ের মরদেহ পুঁতে রাখে।সেই ঘরেই গত শনিবার থেকে স্বাভাবিকভাবে বসবাসও করে জামিল।কয়েকদিন ধরে খোঁজ না পেয়ে নিকটত্বম আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসীর সন্দেহ হলে বুধবার বিকেলে জমিলার ঘরে মেঝে খুঁড়ে সেখানে পচে যাওয়া লাশের অংশ দেখতে পায়।এসময় এলাকাবাসী জামিলকে আটক করে পুলিশে খকবর দেয়।খবর পেয়ে সেখানে সার্কেল এসপি স্যারসহ থানা পুলিশ ও সি,আই,ডির টিম আলামত সংগ্রহ শেষে বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে ঘরের মেঝে খুড়ে জমিলার মরদেহ উত্তোলন করা হয়।গতকাল বৃহস্পতিবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।এদিকে দফাদার মঞ্জিল হোসেন ও এলাকাবাসী জানায়,নিজ মাকে হত্যার পর ঘটলেও জামিলকে স্বাভাবিক দেখা গেছে গত পাঁচদিন।যে ঘরে মাকে পুঁতে রাখা হয় সেই ঘরেই রান্নাবান্নাও করে খেয়েছে জামিল।জামিন নেশা করার কারণে মাস তিনেক আগে তার স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে গেছেন।ওই পাঁচদিনেও জামিল ছাগল চড়ানোসহ সব কাজকর্ম করেছে।এত বড় একটি ঘটনা ঘটিয়ে জামিল কীভাবে এত স্বাভাবিক থাকলো এবং এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করে বের করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।রংপুর জেলা পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার সি সার্কেল আশরাফুল আলম পলাশ জানান,তিনি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন।এখন পর্যন্ত প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে,পারিবারিক কারণে আসামি জামিল তার মাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশ ঘরের ভিতরে পুতে রাখে।তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।এর পেছনে আর কেউ জড়িত আছে কিনা বা অন্য কোন বিষয় আছে কিনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে,পুলিশ সুপার সি সার্কেলের বিশেষ সরকারি নতুন টিম।