প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২১, ২০২৪, ৩:০৮ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ১৬, ২০২২, ২:৩১ এ.এম
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন শেষে ঢাকা ফেরা মানুষের স্রোত
অনলাইন ডেস্ক :-
প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদ্যাপন শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।সড়ক,রেল ও নৌপথে ফিরতি মানুষের চাপ বাড়লেও ছিল না তেমন ভোগান্তি। গতকাল সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী এলাকা দিয়ে স্বাভাবিকভাবেই নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছেন তারা।সড়কে মানুষের তেমন জটলা বা যানজট ছিল না।রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের কিছুটা ভিড় ছিল।এ ছাড়া নৌপথে রাজধানীতে নির্বিঘ্নে ফিরেছে মানুষ।
সড়কপথে ভিড় :যাত্রাবাড়ী প্রবেশমুখ দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লোকজনকে ফিরতে দেখা যায়।সায়েদাবাদ আন্তজেলা বাস টার্মিনাল,যাত্রাবাড়ী মোড়,ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইন বোর্ড,মাতুয়াইল,শনিরআখড়া,রায়েরবাগ,ঢাকা-মাওয়া সড়কের দোলাইরপাড়,পোস্তগোলা এলাকায় মানুষের ভিড় ছিল।তবে নগর পরিবহনগুলো সিটিং করে চলায় এবং অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় যাত্রীদের দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
কুমিল্লা থেকে আসা মঈন উদ্দিন বলেন,নির্বিঘ্নে ঢাকায় ফিরেছি।কিন্তু বাসে উঠতে না পারায় বাসায় ফিরতে পারছি না।লাকসাম থেকে তিশা পরিবহনে আসা নাজমা বেগম বলেন,বাড়ি যাওয়ার সময় বাসে সিট পেতে কষ্ট হয়েছে। যানজটের কারণে ছেলেমেয়ে নিয়ে খুব ভোগান্তি হয়েছে। কিন্তু ঢাকায় ফিরতে সড়কে যানজট ছিল না।নির্বিঘ্নে পৌঁছাতে পেরে ভালো লাগছে।তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব পর্যন্ত প্রায় ১৯কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয় বলে সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান।
এদিকে পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ২১জেলার মানুষ এবার অনেকটাই নির্বিঘ্নে স্বজনদের কাছে যেতে পেরেছেন।এখন সেতু হয়ে নির্বিঘ্নে ফিরে আসছেন। গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর যাত্রাবাড়ী সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে ভিড় বাড়তে থাকে।রাজধানীর একটি কলেজের ছাত্রী সাদিয়া।ঈদের চার দিন আগে ফরিদপুর গ্রামের বাড়ি ঈদ করতে যান।পরিবারের সঙ্গে ঈদ শেষ করে গতকাল সাতসকালেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আলাপকালে তিনি বলেন,ঈদ শেষে আগামীকাল থেকে তার কলেজ খুলছে।তাই খুব সকালেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন।পথে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।পদ্মা সেতু হওয়ায় খুব সহজেই ঢাকায় আসতে পেরেছেন।তবে ৩০০টাকার বাস ভাড়া তার কাছ থেকে ৪০০ নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
রেলস্টেশনে ঢাকা ফেরা মানুষের চাপ :গত দুই দিন ট্রেন স্টেশনে খুব বেশি ভিড় না থাকলেও গতকাল সকাল থেকেই কমলাপুর রেল স্টেশনে ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় না ঘটলেও অনেক ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ের চেয়ে দেরিতে ছেড়েছে।যাত্রীরা অভিযোগ করেছেন,টিকিট কেটেও অতিরিক্ত মানুষের চাপে নির্দিষ্ট সিটে তাঁরা বসতে পারেননি। এর সঙ্গে অতিরিক্ত গরম দীর্ঘযাত্রাকে আরও কষ্টকর করেছে।
গতকাল সকাল থেকে ধূমকেতু এক্সপ্রেস,নীল সাগর, সুন্দরবন,রংপুর,একতা,যমুনা,উপবন,তূর্ণা নিশিথা, পারাবত,সুবর্ণ,মোহনাগঞ্জ,এগারসিন্দু,রংপুর এক্সপ্রেস ও জামালপুর কমিউটারসহ কয়েকটি ট্রেন ঢাকায় এসে পৌঁছেছে।
পঞ্চগড় থেকে একতা এক্সপ্রেসে আসা যাত্রী রুহুল আমিন বলেন,রাত ৯টায় ট্রেনে উঠেছি।এত মানুষ ট্রেনের ভিতরে যে অনেকেই টিকিট কেটেও বসার সুযোগ পাননি।আবার অনেকেই টিকিট না কেটেই সিটে বসে এসেছেন।এত দূরের রাস্তা অনেককেই দাঁড়িয়ে আসতে হয়েছে।পরিবার নিয়ে এত দূর থেকে এভাবে আসাটা খুবই কষ্টের।এ সময় ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানো হলে যাত্রীদের এত দুর্ভোগ পোহাতে হতো না।
চট্টগ্রাম থেকে আসা সুবর্ণ এক্সপ্রেসের যাত্রী সানজিদা ইসলাম বলেন,সামনেই মাস্টার্স ভর্তি পরীক্ষা দেব।তাই দ্রুতই চলে আসতে হয়েছে।সুবর্ণতে সব সময় বেশ ভালোই অবস্থা থাকে। আজকে তো দেখলাম অনেক মানুষ।অবশ্য সবারই কাজকর্ম শুরু হয়ে গেছে।সবাইকে তো যেতে হবে।
কমলাপুর রেল স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মাসুদ সারওয়ার বলেন,সকাল থেকে ১৬টি ট্রেন কমলাপুরে এসে পৌঁছেছে। এগুলোর অধিকাংশ যাত্রী নিয়ে আবার ফিরে গেছে।শুধু নীল সাগর এক্সপ্রেস ২ঘণ্টা দেরিতে স্টেশনে পৌঁছেছে।এ ছাড়া বাকি সব ট্রেন নির্দিষ্ট সময়ে স্টেশনে পৌঁছেছে এবং স্টেশন ছেড়ে গেছে।
তিনি বলেন,গত দুই দিন ভিড় তেমন না থাকলেও শুক্রবার সকাল থেকে মানুষের ভিড় বেড়েছে।আজ ও কাল অধিকাংশ মানুষ ঢাকায় ফিরবে।
লঞ্চে ভোগান্তি নেই :রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান,রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া প্রান্তে ঢাকামুখী যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।গতকাল দুপুরে ঘাটে এসে এমনচিত্র দেখা যায়। সরেজমিনে দেখা যায়,পরিবারের সঙ্গে ঈদ শেষ করে কর্মস্থলে ফিরতে মানুষজন দৌলতদিয়া ঘাটে ভিড় করছেন। তারা ঘাটে এসে ভোগান্তি ছাড়াই ফেরি অথবা লঞ্চে নদী পার হচ্ছেন।ঘাট এলাকায় ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ থাকলেও ঘাটের চিরচেনা সেই যানবাহনের দীর্ঘ সারি আর নেই।দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক ঘাটে এসেই সরাসরি ফেরির দেখা পাচ্ছে।বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মো:শিহাব উদ্দীন বলেন,আমাদের ধারণা ছিল শুক্রবার ও শনিবার দুই দিন যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পাবে।সেই দিক বিবেচনা করে রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ১৬টি ফেরি চলাচল করছে।
এদিকে গতকাল বরিশাল নদী বন্দর থেকে নিয়মিত সার্ভিসের ৭টি এবং স্পেশাল সার্ভিসের ৭টিসহ মোট ১৪টি লঞ্চ রাজধানীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়।গতকাল বিকালে দেখা যায়, প্রতিটি লঞ্চ যাত্রীতে টইটম্বুর হয়ে ওঠে ঢাকামুখী এমভি সুন্দরবন-১০ ও ১১,সুরভী-৮ ও ৯,অ্যাডভেঞ্চার ১ ও ৯, কীর্তনখোলা-২ ও ১০,পারাবত-৯,১০,১৮,মানামী-১, কুয়াকাটা-২ এবং প্রিন্স আওলাদ-১০ নামের বিশালাকার বিলাসবহুল যাত্রীবাহী নৌযানগুলো।যাত্রীর চাপ থাকায় কেবিনের টিকিট আগেই বিক্রি হয়েছে।ভিআইপি এবং বিজনেসক্লাসেও আদায় করা হয় আগের বাড়তি ভাড়া।
অফিস কার্যালয়ঃ- মেসার্স তোকদার বস্ত্রালয়--প্রেসক্লাব পীরগাছা,উপজেলা:-পীরগাছা,জেলা:-রংপুর। মোবাইল:০১৭১-০৮৭০৪২০,০১৭২-৭০২০০৩৫ ই-মেইল :tokdernews@gmail.com