বর্তমান সরকারের অধীনে নয়, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে ভোট হবে।এ সময় নির্বাচন সম্পর্কিত সব ধরনের কর্তৃত্ব থাকবে স্বাধীন কমিশনের বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইভিএম নিয়ে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।নির্বাচনের সময় নির্বিঘ্ন ভোটের পরিবেশসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কমিশনের কাছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন এবং সেই সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকারের সময় বর্তমান সরকারের ভূমিকা কি সে বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন,নির্বাচনকালে প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীসহ নির্বাচন পরিচালনার জন্য আবশ্যকীয় সব সংস্থা,প্রতিষ্ঠান ইসির তত্ত্বাবধানে ন্যস্ত থাকবে।নির্বাচনকালীন সরকারের কর্মপরিধি কেবল মাত্র আবশ্যকীয় দৈনন্দিন রুটিন কার্যাবলীর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।বর্তমান সরকার ইসির কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করবে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।তিনি বলেন,একটা কথা কেউ কেউ বলে থাকে বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না।বর্তমান সরকারের অধীনে কিন্তু নির্বাচন হচ্ছে না,নির্বাচন হবে নির্বাচন কমিশনের অধীনে।যে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের জন্য বর্তমান সরকার ফ্যাসিলেটেড করবে,সম্পূর্ণ সহযোগিতা আমরা দেব।এ সময় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ যেসব বিষয় নির্বাচন রিলেটেড সেগুলো আপনাদের অধীনেই থাকবে।এখানে সরকারের কিছু করণীয় নেই।সরকার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করতে মোটেও আগ্রহী নয়।ইভিএম নিয়ে ক্ষমতাসীন দল নিজেদের অবস্থান তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন,আগামী নির্বাচনে ইভিএমের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি করা জন্য আমরা সিইসির কাছে আহ্বান করছি।আমরা মনে করি,দেশে ইভিএম পদ্ধতি অধিকতর জনপ্রিয় এবং সহজে ব্যবহার করার লক্ষ্যে ইসি এখন থেকেই প্রচার প্রচারণায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।একাদশ সংসদ নির্বাচনে ছয় আসনে ইভিএম ব্যহার করে তৎকালীন বিদায়ী কেএম নূরুল হুদা কমিশন।ওই সময়ও আওয়ামী লীগ ইভিএমের পক্ষে অবস্থান নেয়।এ প্রসঙ্গ টেনে ওবায়দুল কাদের বলেন,আমরা গত নির্বাচনের সময় কমিশনে বলেছি।আমাদের দলের সিদ্ধান্ত হচ্ছে,আমাদের পার্টির স্ট্যান্ড হচ্ছে,আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মিটিং করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।সেই সিদ্ধান্ত আমাদের দিস ইজ লাউড এন্ড ক্লিয়ার-আমরা ইভিএম পদ্ধতির পক্ষে,রাখঢাক করে কোনো লাভ নেই।এখানে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ পদ্ধতিটা বৃদ্ধি করার কথা বলবো।ইভিএমের পক্ষে নিজের অবস্থানের ব্যাখ্যায় তিনি জানান, আওয়ামী লীগ মনে করে,ইসি কাযক্রমে ইভিএমসহ প্রযুক্তির বৃদ্ধির কারণে সব কার্যক্রমের স্বচ্ছতা,জবাবদিহিতা বৃদ্ধি পেয়েছে।ইভিএম ব্যবহারের ফলে ভোট ডাকাতি,কেন্দ্র দল এবং নির্বাচনে জালিয়াাতি,ভোট চুরি বন্ধ হবে।আমরা মনে করি,দেশে ইভিএম পদ্ধতি অধিকতর জনপ্রিয় এবং সহজে ব্যবহার করার লক্ষ্যে ইসি এখন থেকেই প্রচার প্রচারণায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ মনে করে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের জন্য ইসির গ্রহণযোগ্যতা,নিরপেক্ষতা ও সক্ষমতা গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়া ইসির দায়িত্বশীল নিরপেক্ষ আচরণ,সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও ইভিএমে ভোটগ্রহণের পদ্ধতি বৃদ্ধি করতে হবে।এছাড়া তিনি বিতর্কিত কাউকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ না দেওয়া,প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের রিটার্নিং অফিসার থেকে পোলিং অফিসার নিয়োগসহ একগুচ্ছ দাবির কথা বলেন তিনি।আজকে ১৩ রাজনৈতিক দলের সাথে বৈঠকে করতে আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছিল ইসি।তার থেকে ৯টি দল ইসির ডাকে সাড়া দিয়েছে।চারটি দল আজকের সভায় যোগ দেয়নি।এছাড়া এর আগের সভায় যোগ দিতে না পারা গণফোরামের প্রতিনিধিও আজকের মতবিনিময় সভায় উপস্থিত রয়েছেন।