প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২৫, ২০২৪, ৬:০৭ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ৩১, ২০২২, ১:২৯ এ.এম
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারী অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
নিউজ দৈনিক তোকদার নিউজ.কম/নিউজইডিটর:মোঃলিমনতোকদার।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় গোতামারী ডি এন এস সি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে নিম্ন ধাপ থেকে উচ্চ ধাপে বেতন(টাইম স্কেল)পরিবর্তন করার অভিযোগ উঠেছে।ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়,২০১৩সালের মার্চ মাসে জারী করা বেসরকারী শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন ভাতার সরকারী অংশ প্রদান এবং জনবল সর্ম্পকিত নির্দেশিকার বিধি ১১এর উপবিধি ৮অনুযায়ি বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এম পি ওভুক্ত কোন শিক্ষক কর্মচারী চাকরী জীবনে একটি টাইম স্কেল প্রাপ্য হবেন।
কোন শিক্ষক টাইম স্কেল(উচ্চ ধাপ বেতনের কোড)পরিবর্তনের যোগ্য হইলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্টানের ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী রেজুলেশন করতে হবে।এর পর অনলাইনে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠাতে হবে।
কিন্তু অভিযুক্ত শিক্ষক অচিন্ত্য কুমার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করেই দুর্নীতি পরায়ন কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজজে সময়ের আগেই টাইম স্কেল প্রাপ্ত হয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়,গোতামারী ডি এন এস সি স্কুলে শিক্ষকের প্রযোজনীয়তা দেখা দিলে ২৩শে জুন ২০০৪সালে একটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রদান করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।সে অনুযায়ি ২৮শে জুন ২০০৪ইং সালে আবেদন করেন শিক্ষক অচিন্ত্য কুমার বর্মন।আবেদনের প্রেক্ষিতে স্কুল কর্তৃপক্ষ যথা নিয়মে পরীক্ষার মাধ্যমে বাচাই করে ২৮শে ডিসেম্বর ২০০৪ইং সালে তাকে নিয়োগ প্রদান করেন।সে অনুযায়ী ০১জানুয়ারী ২০০৫সালে তিনি গোতামারি ডি এন এস সি উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করেন এবং ২০০৬সালের পহেলা জুলাই তিনি ১ম এম পি ও ভুক্ত হন।এর পর ২০০৯সালের ৭ই জুলাই এর ১তারিখে বিএড করার পর তিনি আরও উচ্চতর বেতন স্কেলে নিজেকে পরিবর্তনের সুযোগ পান ।
নিয়ম অনুয়ায়ী একই স্কেলে ৮বছর চাকরী করার পর টাইম স্কেল পাপ্ত হবেন কিন্তু ২০০৯সালে উচ্চতর বেতন স্কেল নেওয়ার পরেও ২০১৫সালের সেপ্টেমবর মাসে আবার তিনি কতিপয় দুর্নীতি পরায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে উচ্চতর বেতন স্কেল পরিবর্তন করেন।এভাবে প্রতি মাসে সরকারের ১২থেকে ১৫হাজার টাকা অতিরিক্ত উত্তোলন করে তিনি আত্মসাৎ করে আসছেন।আর তার এ অনৈতিক কাজে সহযোগিতা করেন তৎকালীন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শশাংক মোহন রায় ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল মান্নান।অভিযোগ রয়েছে অনৈতিক সুবিধা নিয়েই তারা সে সময় অচিন্ত্যকে বৈধতা দিয়েছিলো।নিয়ম অনুয়াযী বেসরকারী স্কুলের শিক্ষকের সমন্ত ডকুমেন্টস স্কুল কর্তৃপক্ষের কাছে সংরক্ষিত থাকার কথা থাকলে অচিন্ত্য বর্মনের টাইম স্কেলের রেজুলেশন কপি অফিসে সংরক্ষিত নাই এমন কি উপজেলা মাধ্যমিক অফিসেও তার কোন অনুলিপি পাওয়া যায় নি।
এ বিষয়ে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তৎকালিন প্রধান শিক্ষক শশাংক মোহন রায় এর কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।ওই স্কুলের সাবেক সভাপতি আব্দুল মান্নান সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পরে এ বিষয়ে কথা বলতে রাজী হননি।তবে তিনি কোন রেজুলেশনে স্বাক্ষর করেননি বলে নিশ্চিত করেছেন।
তবে গোপন সুত্রে আমরা জানতে পারি যে,আমাদের অনুসন্ধান চলমান থাকাবস্থায় শিক্ষক অচিন্ত্য বর্মন রেজুলেশন অফিস কপি সংরক্ষন করার জন্য কয়েকজন সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যের কাছে স্বাক্ষর এর জন্য গিয়েছিলেন।তাদের মধ্যে কয়েকজন উৎকোচের বিনিময়ে স্বাক্ষরও করেছেন।
এ বিষয়ে সাবেক অভিভাবক সদস্য মোজাম্মেল হক মঞ্জু বলেন,ইউ পি নির্বাচনের সময় অচিন্ত্য আমার কাছে স্বাক্ষর নিয়েছে,রেজুলেশন এর অফিস কপি সংরক্ষনের জন্য।এতদিন পর কেন আপনি স্বাক্ষর দিলেন এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন,আমার নির্বাচন সামনে ছিলো তাই বারাবারি করিনি।অচিন্ত্যের এ বিষয়টি আমিও জানি তাকে অনেকবার আমি বুঝিয়ে বলেছিলাম অতিরিক্ত অর্থ ফিরত দেওয়ার জন্য কিন্তু সে আমার কোন কথা শুনেনি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক অচিন্ত্য কুমার বর্মন এর সাথে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজী হননী।তিনি বলেন আপনারা যাইচ্ছে করেন আমার সমস্ত কাগজ ঠিকই আছে।উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার শহিদুল ইসলাম বলেন,টাইম স্কেলের বিষয়টি আমরা দেখিনা,আমাদের অফিসের স্যার অনেকদিন ধরেই অনুপস্থিত তাই তার সাথে কথা বলা ছাড়া আমি কিছুই বলতে পারবোনা,তবে অনিয়ম হলে আমরা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)সামিউল আমিন বলেন,অচিন্ত্য বর্মন নামের ওই শিক্ষক যদি অবৈধভাবে অন্যের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে সময়ের আগে টাইম স্কেল প্রাপ্ত হয়ে থাকেন বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রযোজনিয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অফিস কার্যালয়ঃ- মেসার্স তোকদার বস্ত্রালয়--প্রেসক্লাব পীরগাছা,উপজেলা:-পীরগাছা,জেলা:-রংপুর। মোবাইল:০১৭১-০৮৭০৪২০,০১৭২-৭০২০০৩৫ ই-মেইল :tokdernews@gmail.com