শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৮ পূর্বাহ্ন
আজ ভয়াল ২৫মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস।
-
Update Time
শুক্রবার, ২৫ মার্চ, ২০২২
-
৪৬৭
Time View
ছবি:দৈনিক তোকদার নিউজ.কম থেকে আজ ভয়াল ২৫মার্চ জাতীয় গণহত্যা দিবস।
১৯৭১সালের এই দিনে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ঢাকাসহ সারা দেশে বাঙালিদের উপর আক্রমণ শুরু করে নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করে এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।
আজ ভয়াল ২৫মার্চ,জাতীয় গণহত্যা দিবস।মানবসভ্যতার ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত হত্যাযজ্ঞের দিন।একাত্তরের অগ্নিঝরা ২৫শে মার্চে বাঙালির জীবনে নেমে আসে নৃশংস,বীভত্স,ভয়ংকর ও বিভীষিকাময় এক কালরাত।এই রাতে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী অপারেশন সার্চলাইট’নামে স্বাধীনতাকামী বাঙালির ওপর হিংস্র দানবের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।আর এদিন বাঙালি জাতি তথা বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছিল ইতিহাসের এক নৃশংস বর্বরতা।২০১৭সালের ১১মার্চ জাতীয় সংসদে ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবস পালনের প্রস্তাব সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হওয়ার পর থেকেই দিনটি জাতীয় গণহত্যা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
এবার মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর প্রাক্কালে জাতির জীবনে ভয়াল ২৫শে মার্চ কালরাত এসেছে এক অন্যরকম আবহে।কী ঘটেছিল সেই রাতে?তখনো কেউ জানে না কী ভয়ংকর,নৃশংস ও বিভীষিকাময় রাত আসছে বাঙালির জীবনে।ব্যস্ত শহর ঢাকা প্রস্তুতি নিচ্ছিল ঘুমের।রাত সাড়ে ১১টায় ক্যান্টনমেন্ট থেকে বের হলো হনন-উদ্যত নরঘাতক কাপুরুষ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।ছড়িয়ে পড়ল শহরময়।আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে গর্জে উঠল অত্যাধুনিক রাইফেল,মেশিনগান ও মর্টার।নিরীহ মানুষের আর্তনাদে ভারী হলো রাতের বাতাস।মুহুর্মুহু গুলিবর্ষণের মাধ্যমে পাকিস্তানি জল্লাদ বাহিনী নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ল।শুরু হলো বর্বরোচিত নিধনযজ্ঞ আর ধ্বংসের উন্মত্ত তাণ্ডব।হকচকিত বাঙালি কিছু বুঝে ওঠার আগেই ঢলে পড়ল মৃত্যুর কোলে।মধ্যরাতে ঢাকা পরিণত হয় লাশের শহরে।রাজারবাগ পুলিশ লাইন,পিলখানা ইপিআর সদর দপ্তর,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়,ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল,বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়,নীলক্ষেতসহ বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে তারা বাঙালি নিধন শুরু করে।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে থাকা গণমাধ্যমও সেদিন রেহাই পায়নি জল্লাদ ইয়াহিয়ার পরিকল্পনা থেকে।পাকিস্তানি হানাদারেরা সেই রাতে অগ্নিসংযোগ করে,মর্টার শেল ছুড়ে একে একে দৈনিক ইত্তেফাক,দৈনিক সংবাদ,জাতীয় প্রেসক্লাব ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে।এ হামলায় জীবন দিতে হয় বেশ কয়েক জন গণমাধ্যমকর্মীকেও।বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরাও জান্তাদের কালো থাবা থেকে রক্ষা পাননি।ড.গোবিন্দচন্দ্র দেব,ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা,অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য,ড.মনিরুজ্জামানসহ বিভিন্ন বিভাগের ৯জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়।
এদিকে ২৫শে মার্চ রাত সোয়া ১টার দিকে একদল সৈন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২নম্বরে অবস্থিত বাড়ির দিকে এগিয়ে যায়।তারা গুলি ছুড়তে ছুড়তে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে।তখন বঙ্গবন্ধু বীরের মতো দোতলার ঝুল বারান্দায় এসে দাঁড়ান।রাত ১টা ২৫মিনিটের দিকে বাঙালির স্বাধীনতার স্বপ্নকে চিরতরে নস্যাতের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় হায়েনার দল।অবশ্য গ্রেফতার হওয়ার আগেই ২৫শে মার্চ মধ্যরাতের পর,অর্থাত্ ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু তত্কালীন ইপিআরের ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্বাধীনতা ও সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা দেন।বঙ্গবন্ধুর এই স্বাধীনতা ঘোষণার ভিত্তিতেই ২৬শে মার্চ বাংলাদেশে স্বাধীনতা দিবস পালিত হয়।
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী:গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো:আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন,দেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত করার মধ্য দিয়েই আমরা একাত্তরের গণহত্যায় জীবনদানকারী প্রতিটি প্রাণের প্রতি জানাতে পারি আমাদের চিরন্তন শ্রদ্ধাঞ্জলি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাণীতে বলেন,৭১-এর ২৫শে মার্চের কালরাতে আত্মোত্সর্গকারী শহিদদের স্মরণ করছি,যাদের তাজা রক্তের শপথ বীর বাঙালিকে অস্ত্র ধারণ করে স্বাধীনতা অর্জন না করা পর্যন্ত জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছিল।তাই আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি,প্রয়োজনে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের বিনিময়ে হলেও ৩০লাখ শহিদ ও ২লাখ নির্যাতিত মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখব।
কর্মসূচি:দিবসটি উপলক্ষ্যে রাজধানীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক,সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কালরাত’স্মরণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।আওয়ামী লীগের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে—আজ ২৩বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যৌথ উদ্যোগে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে।এতে প্রধান অতিথি হিসেবে সংযুক্ত থাকবেন(ভার্চুয়ালি)দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি।এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহ সারা দেশে অনুরূপ কর্মসূচি গ্রহণ করবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আজ বাদ জোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে কালরাতে শাহাদতবরণকারী শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।এছাড়া দেশের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আহ্বান জানিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
দয়া করে এই পোস্টটি আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন,সকল সংবাদ পেতে পেজে লাইক দিয়ে সাথে থাকুন…
এই বিভাগের আরও খবর
★প্রকাশক:- মোঃ মোশারফ হোসেন তোকদার।
★ব্যবস্থাপনা পরিচালক:- মোঃ এম,খোরশেদ আলম,সভাপতি প্রেসক্লাব পীরগাছা,রংপুর বিভাগ।
© All rights Reserved © 2020 গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রনালয়ের বিধি মোতাবেক নিবন্ধনের জন্য আবেদিত এই ওয়েবসাইটি Tokdernews.com বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পোর্টাল।