বুধবার(১৬মার্চ)বিকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য তিনি বলেন,আর্থিক লেনদেনের অডিও ফাঁসের ঘটনাটি তদন্ত করা হবে।তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্প্রতি চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি তৌহিদুজ্জামানের সঙ্গে ওই আসামির ছেলে তুরাস তাকমির সজলের একটি অডিও ফাঁস হয় বলে অভিযোগ ওঠে।এই নিয়ে গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়।যেখানে আর্থিক লেনদেন ও মামলার ধারার বিষয়ে কথা বলতে শোনা গেছে।
যদিও অডিওর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওসি তৌহিদুজ্জামান ও সজল।এই বিষয়ে অভিযুক্ত ওসি দাবি করেন,আসামির স্বজনের সঙ্গে অর্থ লেনদেনের অডিও ফাঁসের ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন।তিনি প্রকাশ হওয়া অডিওর বিষয়ে কিছুই জানেন না।তবে হত্যা মামলার চার্জশিট থেকে আসামির নাম বাদের তদবির না শোনায় কেউ এই অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
আসামি খলিলুর রহমানের ছেলে সজলের দাবি,ওই কথোপকথনের অডিও মিথ্যা।মামলার বিষয়ে ওসির সঙ্গে তার কখনোই মোবাইলে কথা হয়নি।মামলার তদন্ত করতে ওই পুলিশ কর্মকর্তা একদিন তাদের বাড়িতে এসেছিলেন।ফাঁস হওয়া অডিও এডিট করে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
তিনি আরও দাবি করেন,মামলা থেকে তার বাবাসহ শ্বশুরকে অব্যাহতি দিতে পূর্বপরিচিত দুই ব্যক্তিকে দুই লাখ টাকা দিয়েছিলেন।চার মাস আগে ওই টাকা বাচ্চু চাচার ওষুধের দোকান থেকে নিয়ে যান তারা।এই টাকা নিয়েও কথামতো তারা কোনও কাজেই করেননি।বরং পুলিশ শক্ত ধারা বসিয়ে বাবা ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ওষুধ ব্যবসায়ী বাচ্চু মিয়া জানান, সজল তার দোকানে দুই লাখ টাকা রেখে যাওয়ার পর রাত ৮টার দিকে ওই টাকা নিয়ে যান তোতা ও তনু নামে দুই ব্যক্তি।তবে কী কারণে এই টাকার লেনদেন-তা জানেন না তিনি।
গত বছরের ১০এপ্রিল ব্যবসায়ী হাসান আলীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা মাসুদ রানার চকমামরোজ এলাকার বাড়িতে।তাকে অপহরণের পর প্রায় এক মাস নিজ বাড়িতে আটক রাখেন মাসুদ রানা।পরে এ ঘটনায় মাসুদকে প্রধান এবং রুমেন হক ও খলিলুর রহমানকে আসামি করে সদর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী।
প্রথমে দুই ধাপে দুই পুলিশ কর্মকর্তা মামলাটির তদন্তের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। পরে তৃতীয় তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান জেলা গোয়েন্দা(ডিবি)পুলিশের ওসি তৌহিদুজ্জামান।গত ১৬ জানুয়ারি তিন আসামিকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন তিনি।এরপর গত ১৮জানুয়ারি সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি হিসেবে যোগদান করেন।
এদিকে,পুলিশ ও আসামির স্বজনের অডিও ফাঁসের ঘটনায় মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন নিহতের স্বজনরা। মামলার বাদী বিথি বেগম দাবি করেন,স্বামী হত্যার প্রধান আসামি কারাগারে থাকলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে দুই আসামি।পুলিশকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে আসামিরা মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়া চেষ্টা করছেন।ঘটনার প্রথম থেকেই পুলিশের ভূমিকা ছিল পক্ষপাতমূলক।দ্রুত আসামিদের গ্রেফতার এবং অডিও ফাঁসের ঘটনাটি তদন্ত করে জড়িতদের দৃষ্টান্ত শাস্তির দাবি জানান নিহতের স্ত্রী।