বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন,লালফিতার দৌরাত্ম্যে নিজেই অসহায়।এই দৌরাত্ম্যে আমি নিজেও কিছুটা কাবু হয়ে পড়েছি।শনিবার(১৯ ফেব্রুয়ারি)দুপুরে রংপুরের বেগম রোকেয়া মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন,আমি নিজেও খুব হ্যাপি না।কারণ সারাটা জীবন কাজ করে বেরিয়েছি।সরকারের এই মন্ত্রীর চেয়ারে বসে মনে হয় এটা কবে বদলাবে।তবে চেষ্টা করা হচ্ছে, আমরা চেষ্টা করছি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন,কর্মসংস্থান সৃষ্টি না হওয়ায় রংপুর অঞ্চল পিছিয়ে পড়ছে।রংপুর অঞ্চলে ভারী শিল্প কলকারখানা নেই।বড় বড় কোম্পানিগুলো এখানে আসতে চায় না।কারণ উৎপাদন খরচ বেশি পড়বে।এর পেছনে যোগাযোগ ব্যবস্থা পরিবহন খরচ,গ্যাস সংযোগ না থাকাসহ বিভিন্ন কারণ রয়েছে।তবে এ অঞ্চলের শ্রমিকরা অনেক পরিশ্রমী ও সুশৃঙ্খল।জাতীয় পর্যায়েও এর সুনাম রয়েছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন,এক সময় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অর্ধেক মানুষও আসত না।যাতায়াতে অনেক কষ্ট হত যাত্রী পাওয়া যেত না।কিন্তু এখন সৈয়দপুর বিমানবন্দরে দিনে ১৩-১৭টি ফ্লাইট ওঠানামা করছে।ঈদের সময়ে ২২টিরও বেশি হয়ে থাকে।আগামী এক বছরের মধ্যে সেখান থেকে প্রতিদিন অন্তত ৩০টি ফ্লাইট ওঠানামা করবে।ইতোমধ্যে সাড়ে ৬০০কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।বিমানবন্দরের মূল ভবনটা হয়ে গেছে।লাউঞ্জ,ব্যাংক বুথসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও বেড়েছে।এখন এটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর।নেপাল ও ভুটানের ফ্লাইট নিয়ে কথা চলছে এটিও চালু করা সম্ভব।
শ্যামপুর চিনিকল প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন,একটি চিনিকলও লাভজনক নয়।এই দেশে যে আখ হয় তা দিয়ে চিনিকল চালু রাখা সম্ভব নয়।এই খাতে শুধু লোকসান হচ্ছে।এ অবস্থায় চিনিকল শ্রমিকদের বাঁচাতে বিকল্প ব্যবস্থা নিতে হবে।ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে চিনিকলগুলোকে প্রয়োজনে বেসরকারিখাতে চিনি ছাড়া অন্য কিছু উৎপাদন নিয়ে ভাবতে হবে।এতে শ্রমিকরা বেকার থাকবে না,লোকসানও বন্ধ হবে।কিন্তু লালফিতার দৌরাত্ম্যে অনেক কিছুই করা সম্ভব হচ্ছে না।
তিস্তা নদীর দুই পাশে সাড়ে আট হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট নিয়ে রংপুর অঞ্চলের মানুষকে হতাশ না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন,তিস্তা নদী নিয়ে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী খুব সিরিয়াস।আন্তর্জাতিক একটা ছোট ঝামেলা আছে এ কারণে বিলম্ব হচ্ছে।তবে এটা হলে নদীর দুই পাড়ে বিশাল অর্থনৈতিক জোন গড়ে তোলা সম্ভব হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন,সুশাসন না থাকলে উন্নয়ন যতই হোক,তা দৃষ্টিগোচর হয় না।এ জন্য উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের কাছে সুশাসনের গুরুত্ব অনেক বেশি।
অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর ডায়ালগের(সিপিডি)গবেষণা পরিচালক ড: খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সচেতন নাগরিক কমিটির(সনাক)সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সদরুল আলম দুলু,সুজনের জেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ,নারী সংগঠক ও উন্নয়নকর্মী মোশফেকা রাজ্জাক, আরডিআরএস বাংলাদেশের হেড অব ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম আব্দুস সামাদ।