প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জিয়াউর রহমান গুলি চালিয়েছে,এ রকম কোনো নজির নেই।মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের ভূমিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,খালেদ মোশাররফ আহত হয়ে গেল এবং জিয়াকে সেক্টর কমান্ডার করা হয়েছিল।কিন্তু সে কখনো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালিয়েছে,এ রকম কিন্তু কোনো নজির নাই।এ রকম কোনো নজির কেউ দেখাতে পারবে না।
মঙ্গলবার সকালে শোকের মাস আগস্টের শেষ দিনটিতে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণেএসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত এ সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেরাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে (কেআইবি) মূল অনুষ্ঠানে অংশ নেন তিনি।
দেশে এখনও যুদ্ধাপরাধীদের দোসররা এবং ১৫ আগস্টের খুনি ও ফাঁসির আসামিদের সন্তানরা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সঙ্গে যেসব আন্তর্জাতিক শক্তি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করেছিল তাদের অনেকেই এদের মদদ দিয়ে যাচ্ছে। জিয়াউর রহমানই ছিল স্বাধীনতাবিরোধীদের মূল শক্তির উৎস এবং সেই বেইমানিটা করেছিল। কাজেই এ ব্যাপারে জাতিকে সতর্ক থাকতে হবে।
মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) শোকের মাস আগস্টের শেষ দিনে রাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন,দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে মুক্তিযুদ্ধের স্বাধীনতা বিরোধীদের চক্রান্ত এখনও অব্যাহত আছে।এ ব্যাপারে জাতিকে সতর্ক থাকতে হবে।১৫ আগস্টের পর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ছাড়াও আমার জীবনের ওপর বহুবার হামলা চালানো হয়। সবাইকে মনে রাখতে হবে পরাজিত শক্তি সবসময়ই সক্রিয়।
বাংলাদেশে কিছু লোক সবসময় ক্ষমতাসীনদের পদলেহনকারি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,এই চাটুকারের দল সব সময় নিজের দেশের এবং নিজের মানুষের ভাগ্য নিয়েও ছিনিমিনি খেলেছে।সব সময় আঁতাত করে আমাদের দেশের সর্বনাশ করেছে।সে জন্যই ৭১ সালে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী যখন গণহত্যা শুরু করে তখন স্থানীয় দালাল চক্র এবং পাকিস্তানী বাহিনীর দোসররা কোনো দিন চায়নি বাংলাদেশ স্বাধীন হোক।আর তারপর যখন বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করলো এবং পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী পরাজিত হলো তখন সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই তারা ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড করেছিল।এর পরেই বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের নামটা চিরতরে মুছে ফেলার অপচেষ্টা হয়েছিল।মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ এবং চেতনাকে ধ্বংস করা হয়েছিল।
খালেদ মোশাররফ আহত হলে জিয়াউর রহমানকে সেক্টর কমান্ডার করা হয়েছিল জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন,জিয়া কখনো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি চালিয়েছে এরকম কোনো নজির নাই।এরকম কোনো নজির কেউ দেখাতে পারবে না।কর্নেল ফারুক-রশিদ বিবিসিতে যে ইন্টারভিউ দিয়েছিল সে ইন্টারভিউতেও তারা স্বীকার করেছে,শুধু তাই নয় অনেক পত্র পত্রিকাতেও তাদের বক্তব্য এসেছে জিয়াউর রহমান এই খুনিদের সাথে সবসময় ছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, মেধাবী ছাত্রদের অস্ত্র, মাদক ও অর্থ তুলে দিয়ে বিপথে নিয়ে গেছে জিয়াউর রহমান। তার স্ত্রী খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় এসে হুমকি দিয়েছিল, আওয়ামী লীগকে মোকবিলা করতে তার ছাত্রদলই যথেষ্ট। তিনিও ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্রদের ভূমিকা রয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন,আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি অর্জন সেই মাতৃভাষার অধিকার প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন বা যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সবসময় ছাত্ররাই করেছে।তাঁরাই সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে।পড়াশোনার পাশাপাশি দেশ ও জনগণের কাজে ছাত্রলীগকে মনোনিবেশ করার নির্দেশ দেন এবং করোনাভাইরাসের সময় দেশের জনগণের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় ছাত্রলীগের প্রতিটি নেতা-কর্মীদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতাকে হত্যার নেপথ্য ক্রীড়নকসহ এ দেশে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির গোড়াপত্তনকারী হিসেবে সেনাশাসক জিয়াউর রহমানকে পুনরায় অভিযুক্ত করেন। তিনি বলেন,পঁচাত্তরের পর যারা অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে হত্যা,ক্যু,ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল করে,সেখানে নিজের দলেরও যেমন বেইমান,মোনাফেক,মীরজাফর ছিল,খন্দকার মোশতাক গং আর তাদের শক্তিটা ছিল জিয়াউর রহমান।
প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার আত্মস্বীকৃত খুনি ফারুক-রশিদের দম্ভভরে বিবিসিতে প্রদত্ত স্বেচ্ছায় সাক্ষাৎকার দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বলেন,কর্নেল ফারুক-রশিদ বিবিসিতে যে ইন্টারভিউ দিয়েছিল,সে ইন্টারভিউতেও তারা স্বীকার করেছে।শুধু তাই নয়,অনেক পত্র-পত্রিকাতেও তাদের বক্তব্য এসেছে,জিয়াউর রহমান এই খুনিদের সঙ্গে সব সময় ছিল।এই জিয়াউর রহমানই ছিল মূল শক্তির উৎস এবং সেই বেইমানিটা করেছিল।অথচ এই জিয়াকে মেজর থেকে জাতির পিতাই মেজর জেনারেল করেছিলেন,বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী বিদেশি শক্তির মদদে স্বাধীনতাবিরোধীদের চক্রান্ত এখনো অব্যাহত। তিনি এ ব্যাপারে জাতিকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা বলেন,এখনো যুদ্ধাপরাধী,পরাজিত শক্তি এবং ১৫ আগস্টের খুনি,ফাঁসি যাদের হয়েছে তাদের ছেলেপেলে,যুদ্ধাপরাধীদের দোসর ও বংশধর,তারা কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে চক্রান্ত,ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।তিনি বলেনযে আন্তর্জাতিক শক্তি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতা করেছিল,তাদের কিছু কিছু এদের মদদ দিয়ে থাকে।কাজেই এ ব্যাপারে জাতিকে সতর্ক থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,এই বাংলাদেশে ১৫ আগস্টের যে হত্যাকাণ্ড ঘটে গেছে এবং এরপর ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা,আমার জীবনের ওপর বহুবার হামলা,চুয়াত্তর সালে কামালের (শেখ কামাল)ওপর হামলা হলো।তাকেও গুলি করে হত্যার চেষ্টা হলো,যখন দেখল সে বেঁচে গেছে,তার নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হলো।অর্থাৎ,পরাজিত শক্তি সব সময়ই এ ক্ষেত্রে সক্রিয় ছিল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু,বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ও ১৫ আগস্টের শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খানের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন।অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের বাৎসরিক প্রকাশনা জন্মভূমি এবং জয় বাংলা ম্যাগাজিনের (দ্বিতীয় সংস্করণ)মোড়ক উন্মোচন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেনঃ আমাদের দেশে কিছু লোক থাকে,সব সময় ক্ষমতাসীনদের পদলেহনকারী।এই চাটুকারের দল সব সময় নিজের দেশের ও নিজের মানুষের ভাগ্য নিয়েও ছিনিমিনি খেলেছে।সব সময় আঁতাত করে আমাদের দেশেরসর্বনাশ করেছে।সে জন্যই একাত্তর সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যখন গণহত্যা শুরু করে,তখন স্থানীয় দালাল চক্র এবং পাকিস্তানি বাহিনীর দোসররা কোনো দিন চায়নি বাংলাদেশ স্বাধীন হোক।আর তারপর যখন বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করল এবং পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী পরাজিত হলো,তখন সেই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতেই তারা ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র,মাদক ও অর্থ তুলে দিয়ে বিপথে নিয়ে গেছেন জিয়াউর রহমান।তাঁর স্ত্রী খালেদা জিয়াও ক্ষমতায় এসে হুমকি দিয়েছিলেন,আওয়ামী লীগকে মোকাবিলা করতে তাঁর ছাত্রদলই যথেষ্ট।তিনিও ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী পড়াশোনার পাশাপাশি দেশও জনগণের কাজে ছাত্রলীগকে মনোনিবেশ করার নির্দেশ দেন এবং করোনাভাইরাসের সময় দেশের জনগণের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় ছাত্রলীগের প্রত্যেক নেতা-কর্মীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
শেখ হাসিনা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং স্বাধীনতা পরবর্তী যুদ্ধ বিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গমাতার অবদানের কথাও আলোচনায় তুলে এনে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গিয়েছেন। আর তাঁর পাশে থেকে সবসময় প্রেরণা দিয়েছেন,শক্তি দিয়েছেন আমার মা’বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব।আমার মা ছাত্রলীগ সংগঠনকে গড়ে তোলায় দিকনির্দেশনা দিতেন।আর্থিক সংকট দেখা দিলে নিজের হাতের গয়না বিক্রি করে টাকা জোগাড় করে দিয়েছেন।সব সময় আমাদের পরিবারের উপর গোয়েন্দা নজরদারি ছিল।আমার মা এত সূক্ষ্মভাবে কাজগুলো করতেন,গোয়েন্দারা টেরই পায়নি।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
অনুষ্ঠানে জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মৃতিচারণমূলক বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান এমপি। ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ছাত্রলীগের বাৎসরিক প্রকাশনা ‘জন্মভূমি’ এবং ‘জয় বাংলা- ম্যাগাজিনের (২য় সংস্করণ) মোড়ক উন্মোচন করেন।
বিডি// নিজস্ব প্রতিবেদক দৈনিক তোকদার নিউজ.কম এর প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ,তথ্য,ছবি,আলোকচিত্র,রেখাচিত্র,ভিডিওচিত্র,অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।